ফের শতরান বাটলারের; দুরন্ত লড়াই শ্রেয়স-ফিঞ্চের
ময়ূখ লাহিড়ী
দৃশ্য একঃ নাইট ইনিংসের প্রথম বল। অ্যারন ফিঞ্চের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট সুনীল নারাইন। কেকেআরের জার্সিতে নিজের ১৫০ তম ম্যাচে এক বলও খেলার সুযোগ পাননি।
দৃশ্য দুইঃ কেকেআর ইনিংসের নবম ওভার। প্রসিধ কৃষ্ণর বলে আপার কাট করতে গিয়ে আউট ফিঞ্চ। বর্তমান নাইটের সঙ্গে মাঠেই বিশেষণ বিনিময় প্রাক্তন নাইটের।
দৃশ্য তিনঃ নাইটদের ইনিংসের ১৬ তম ওভার। দুই আইয়ারের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি। মাঠেই অধিনায়কের কড়কানি হজম করলেন বেঙ্কটেশ।
দৃশ্য চারঃ কেকেআর ইনিংসের ১৭ তম ওভারের প্রথম বলেই যুজবেন্দ্র চাহলের ফ্লাইটে ঠকে স্টাম্পড বেঙ্কটেশ। ওভারের চতুর্থ, পঞ্চম এবং ষষ্ঠ বলে প্যাভিলিয়নে যথাক্রমে শ্রেয়স আইয়ার, শিবম মাভি এবং প্যাট কামিন্স। হ্যাটট্রিক চাহলের। ওভারে চার উইকেট-সহ মোট পাঁচ উইকেট।
কেকেআরের প্রথম কোচ জন বুকানন বলতেন, টি-২০ ম্যাচে একটা ওভার নষ্ট করা মানে ইনিংসের পাঁচ শতাংশ নষ্ট করা। অর্থাৎ, গোটা ম্যাচে এক ওভার মানে আড়াই শতাংশ। সেই আড়াই শতাংশই যে খেলার রঙ আমূল বদলে দিতে সক্ষম তা আইপিএলের ১৪ বছরের জন্মদিনে করে দেখালেন যুজবেন্দ্র চাহল। ম্যাচঘোরানো ওভার যখন বল করতে আসছেন তখন নাইটদের প্রয়োজন চার ওভারে ৪০ রান। হাতে ছ’উইকেট। তার উপর ক্রিজে জাঁকিয়ে বসেছেন শ্রেয়স। জস বাটলারের শতরানের পাল্টা দিতে রীতিমতো তৈরি দেখাচ্ছে নাইট অধিনায়ককে। ঠিক সেই সময়ই উলটপুরাণ। ওই ওভারের পর তিন ওভারে নাইটদের দরকার ছিল ৩৯ রান। টি-২০ জমানায় অবশ্যই বিরাট লক্ষ্য নয়। কিন্তু মেরুদণ্ড দুমড়ে যাওয়া নাইটদের পক্ষে আর ম্যাচে ফেরা সম্ভব ছিল না। শ্রেয়স (৫১ বলে ৮৫) ও ফিঞ্চের (২৮ বলে ৫৮) দুর্দান্ত লড়াইয়ের পরেও নয়।
এর আগে অবশ্য রাজস্থানকে দুর্দান্ত জায়গায় পৌঁছে দিয়েছিলেন বাটলার। নেপথ্যে ব্রিটিশ কিপিং অলরাউন্ডারের ৬০ বলে ১০৩ রানের ইনিংস। সঙ্গে মানানসই অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন (১৯ বলে ৩৮) এবং শিমরন হেটমায়ার (১৩ বলে ২৬ অপরাজিত)। যে গতিতে রাজস্থান রান তুলছিল তাতে আড়াইশো উঠে গেলেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু ছিল না। কিন্তু শেষপর্যন্ত যে তা হয়নি তার জন্য মুখ্য কৃতিত্ব দাবি করতে পারেন নারাইন (২/২১)।
২১৭ তাড়া করে সাত রানে হার। একপেশে ম্যাচ বলা যাবে না কোনওভাবেই। কিন্তু নাইট সমর্থকদের বিভ্রান্ত করে গেল দলের গেমপ্ল্যান। বোলিং আক্রমণ দিশাহীন। পরিকল্পনাবিহীন লাইন-লেংথ। এলোমেলো ফিল্ডিং সাজানো। মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো ব্যাটিং অর্ডার। ব্যাট হাতে শ্রেয়স যতই নম্বর আদায় করে নিন, নেতৃত্বের পরীক্ষায় তাঁকে আপাতত গ্রেস মার্ক দিয়েই পাশ করাতে হবে।