আইপিএলে যুগ্ম দ্রুততম অর্ধশতরানের নজির অজি অধিনায়কের
ময়ূখ লাহিড়ী
চার ওভারে ৪৯ রান দিয়ে দু’উইকেট। অতি বড় নাইট সমর্থকও ভেবেছিলেন, আজকে দিনটা তাঁর নয়। কিন্তু হালের টি-২০ জমানাতেও ক্রিকেট যে থেকে গিয়েছে মহান অনিশ্চয়তার খেলা হয়েই তা বুধবারের এমসিএ স্টেডিয়ামে আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন প্যাট কামিন্স। বলের মাশুল সুদে-আসলে উশুল করে নিলেন অজি টেস্ট অধিনায়ক। খেললেন মাত্র ১৫ বল। তার মধ্যে ছ’বারই বল উড়ে গেল গ্যালারিতে। ১৪ বলে পৌঁছলেন অর্ধশতরানে। আইপিএলের ইতিহাসে যুগ্ম দ্রুততম। শেষ্পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেন ৬১ রানে। আর সেই ইনিংসে ভর করেই বরাবরের বিভীষিকা মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে পাঁচ উইকেটে হারাল কলকাতা নাইট রাইডার্স। তাও চার ওভার বাকি থাকতে। যা নাইটদের নেট রানরেটকে অনেকটাই চাঙ্গা করে দিল।
১৬১ রানের পুঁজি নিয়ে অবশ্য যথেষ্ট পরিকল্পনামাফিক এগোচ্ছিলেন রোহিত শর্মারা। পিচে বাড়তি গতি এবং বাউন্স মজুত ছিল। আর তা কাজে লাগিয়েই নাইটদের রীতিমতো ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছিল মুম্বই। মুম্বইয়ের দুই ঘরের ছেলে অজিঙ্ক রাহানে (১১ বলে ৭) এবং শ্রেয়স আইয়ার (৬ বলে ১০) সেই বাউন্সেরই শিকার। দু’জনেই ফিরলেন পুল করে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে। স্যাম বিলিংস (১২ বলে ১৭), নীতিশ রানা (৭ বলে ৮) এবং আন্দ্রে রাসেলও (৫ বলে ১১) আউট হলেন বল গ্যালারিতে পাঠাতে গিয়ে। নাইটদের স্কোরবোর্ডে তখন ১০১/৫। রক্তের স্বাদ পেয়ে গিয়েছে মুম্বই। প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান বলতে ক্রিজে শুধু বেঙ্কটেশ আইয়ার। কিন্তু সেখান থেকেই শুরু কামিন্সের তাণ্ডব। শর্ট বল, লেংথ বল বা ওভারপিচড – কোনও বলকেই রেয়াত করেননি অজি সিমিং অলরাউন্ডার। কামিন্স ক্রিজে আসার পর মাত্র দু’বল খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন বেঙ্কটেশ। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই পূর্ণ করলেন নিজের অর্ধশতরান (৪১ বলে)। অভ্যস্ত মারমুখী ব্যাটিং ছেড়ে অবতীর্ণ হলেন ‘শিট অ্যাঙ্কর’-এর ভূমিকায়।
এর আগে প্রাণবন্ত পিচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন রোহিত শর্মারা। কিন্তু প্রথম ১২ ওভার খোলস ছেড়ে বেরোতেই পারেননি মুম্বই ব্যাটসম্যানরা। নেপথ্যে উমেশ যাদবদের আগ্রাসী বোলিং। সেই সময় তাদের রান ছিল তিন উইকেটে ৫৮। কিন্তু তারপরেই নাইটদের বোলিং নিয়ে ছেলেখেলা শুরু করলেন সূর্যকুমার যাদব। ইনিংসের শেষ ওভারে যখন প্রাক্তন নাইট আউট হলেন তখন তাঁর নামের পাশে ৩৬ বলে ৫২ রান। ‘স্কাই’-কে যোগ্য সঙ্গত করলেন তিলক ভার্মাও (২৭ বলে ৩৮ অপরাজিত)। আর শেষ পাঁচ বল খেলে ২২ রান করে মুম্বইকে দেড়শোর গণ্ডি পার করে দিলেন কায়রন পোলার্ড। সবমিলিয়ে শেষ আট ওভারে উঠল ১০৩ রান।
তবে এতকিছুর মধ্যেও খচখচানি রয়ে গেল ফিল্ডিং নিয়ে। তিলকের রান যখন তিন, সেই সময় তাঁর ক্যাচ ফেললেন রাহানে। যে ক্যাচ অনেক সহজে ধরতে পারতেন উইকেটের পিছনে থাকা স্যাম বিলিংস। রোহিতের আউটের ক্ষেত্রেও আর একটু হলে ক্যাচ ফস্কাতেন বিলিংস। নেপথ্যে বরুণ চক্রবর্তীর ভুল কল। সেই বরুণ যাঁকে ফিল্ডিং-এর জন্য কার্যত মাঠে লুকিয়ে রাখেন নাইট অধিনায়করা। মুম্বই-বধের সেলিব্রেশনের মধ্যে কাঁটা বলতে এটুকুই।