ন’বছর আগের হারের বদলা নিল চেন্নাই সুপার কিংস
স্পোর্টিওয়ার্ল্ড নিউজ ডেস্ক
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আইপিএলের প্রথম তিন মরশুম ব্যর্থ হয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। এরপর গৌতম গম্ভীর দায়িত্ব নেওয়ার পর নিজের দ্বিতীয় মরশুমে নাইটদের চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন ২০১২ সালে। যেবার চেন্নাই সুপার কিংসের তোলা ১৯০ তাড়া করে আইপিএল প্রথমবার কলকাতায় নিয়ে এসেছিল নাইটরা।
শুক্রবারের দুবাইতেও ন’বছর আগের সেই স্মৃতি ফেরানোর লক্ষ্যে ছিলেন ইয়ন মর্গ্যানরা। কিন্তু সে গুড়ে বালি। ১৯৩ তাড়া করতে গিয়ে দুই ওপেনার বাদে কেউই সেভাবে দাঁড়াতে পারলেন না। ন’বছর আগের সেই ফাইনালে নায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মনবিন্দর বিসলা। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল ৪৮ বলে ৮৯ রানের ম্যাচজেতানো ইনিংস। আর সেই ইনিংসই আপাত অসম্ভব লক্ষ্যকে এনে দিয়েছিল নাইটদের নাগালের মধ্যে। কিন্তু এদিনের দুবাইতে সেরকম কোনো বিসলার খোঁজ পায়নি নাইটরা। আর ৩৪ রানে আট উইকেট হারালে কোন বিসলাই কিছু করতে পারবেন না। নাইটদের মিডল অর্ডার যে কুৎসিত ব্যাটিংয়ের পরিচয় দিয়েছিল দু’দিন আগের কোয়ালিফায়ারে সেই ফর্ম বজায় রেখেই ফাইনালেও দলের ভরাডুবরর মূল কারণ হয়ে থাকল দীনেশ কার্তিক(৯), ইয়ন মর্গ্যান (৪), সুনীল নারাইন (২), শাকিব আল হাসান (০), রাহুল ত্রিপাঠী(২) এবং নীতিশ রানাদের (০) জঘন্য ব্যাটিংগ।
অথচ ১৯৩ রান তাড়া করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেছিলেন বেঙ্কটেশ আইয়ার এবং শুভমান গিল। ব্যক্তিগত শূন্য রানে জীবন পেয়েছিলেন আইয়ার। নেপথ্যে ধোনির দৃষ্টিকটুভাবে ক্যাচ ফস্কানো। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই মারমুখী হয়ে উঠেছিলেন আইয়ার। সঙ্গে স্ট্রাইক রোটেট করে যাচ্ছিলেন শুভমানও। ঠিক যে সময় শুভমান গিয়ার বদল করতে শুরু করেছিলেন সেই সময়ই ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছিলেন। কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ার এস রবি জানান, স্পাইডারক্যাম স্পর্শ করেছিল বল। জোড়া সুযোগ পেয়ে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছিলেন নাইটদের দুই ওপেনার। আইয়ার নিজের অর্ধশতরান পূর্ণ করেছিলেন মাত্র ৩১ বলে। স্কোরবোর্ডে যখন ১০.৪ ওভারে ৯১ রান ঠিক সেই সময়ই বাড়তি আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়ে আউট হলেন আইয়ার। আর সেখান থেকেই শুরু হল ডাগ-আউটের উদ্দেশে মিডল অর্ডারের মিছিল। একটা দিক ধরে রাখার চেষ্টা করছিলেন শুভমান। কিন্তু অর্ধশতরান পূর্ণ করার পরেই মনঃসংযোগের চিড় ধরল তাঁর। তারকাখচিত মিডল অর্ডারের বদান্যতায় ৯১/০ থেকে ১২৫/৮। তাও মাত্র ৩৫ বলে। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়ানোর প্রশ্ন ছিল না। ঘুরে দাঁড়ানো যায়ওনি। শুধু শিভম মাভি (২০) এবং লকি ফার্গুসনের (১৮) দৌলতে হারের ব্যবধান কমানো গেল। ১২৫/৮ থেকে ১৬৫/৯-এ শেষ করল নাইটরা।
এর আগে ফ্যাফ দু প্লেসির (৫৯ বলে ৮৬) দুর্দান্ত ইনিংস দু’শোর কাছাকাছি পৌঁছে দিয়েছিল চেন্নাই সুপার কিংসকে। যোগ্য সঙ্গত করেছিলেন ঋতুরাজ গায়কোয়াড় (২৭ বলে ৩২), রবিন উথাপ্পা (১৫ বলে ৩১) এবং মইন আলি (২০ বলে ৩৭ অপরাজিত)। সুনীল নারাইন (২/২৬) ছাড়া নাইটদের কোনও বোলার সেভাবে দাগ কাটতে পারেননি। আইয়ার এক ওভার বল করে মাত্র পাঁচ রান খরচ করলেও কেন তাঁকে আরও বল করানো হল না তার উত্তর শুধুমাত্র নাইটদের টিম ম্যানেজমেন্টই দিতে পারবে। ঠিক যেরকম একইভাবে বোধগম্য নয় কোন কারণে সুনীল নারাইনকে চার নম্বরে ব্যাট করতে পাঠানো হল। চোট পাওয়া রাহুল ত্রিপাঠী পরে ব্যাট করবেন জানাই ছিল। কিন্তু মর্গ্যান, কার্তিকের মতো সিনিয়র খেলোয়াড়রা প্রয়োজনের সময় এই দায়িত্ব থেকে কেন নিজেদের সরিয়ে নিলেন তা একটা বড় প্রশ্ন হয়ে থেকে গেল।