শনিবারই দুবাইয়ের বিমান ধরছেন কোহলিরা
১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১
স্পোর্টি ওয়ার্ল্ড নিউজ ডেস্ক
শেষ মুহূর্তে ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্ট বাতিল হয়ে যাওয়ার ফলে বড় ক্ষতির মুখে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড। জানা গিয়েছে, অন্তত ৩০ মিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতি হয়েছে তাদের। কিন্তু কেন শেষ মুহূর্তে বাতিল করতে হলো ম্যাচ? সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে, মাঠে নামার আগে করোনার কাঁপুনি ধরে গিয়েছিল ভারতীয় ড্রেসিংরুমে। গোটা বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই আলোচনা চলছিল বিসিসিআই এবং ইসিবি-র মধ্যে এবং সেই আলোচনা গড়াতে গড়াতেই শুরু হওয়ার মাত্র ঘন্টাদুয়েক আগে বাতিল করে দেওয়া হয় ম্যাচ।
টেস্ট বাতিল হওয়ার কারণ করোনা পজেটিভ বলা হলেও ভিতরে ভিতরে কিন্তু জানা যাচ্ছে অন্য কথা। শোনা যাচ্ছে, মানসিকভাবে অত্যন্ত ক্লান্ত ভারতীয় ক্রিকেটাররা। সপ্তাহের পর সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পর এবার জৈব সুরক্ষাবলয় থেকে কিছুটা অব্যাহতি চাইছেন তাঁরা।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল থেকেই কমেন্ট্রি বক্সে যাঁকে দেখা যাচ্ছিল সেই দীনেশ কার্তিক পঞ্চম টেস্টের আগেই দুবাইয়ের বিমান ধরেছেন কলকাতা নাইট রাইডার্স শিবিরে যোগ দেবেন বলে। তাঁর কথায়, “একের পর এক জৈব সুরক্ষাবলয়ে ঢুকতে হচ্ছে ক্রিকেটারদের। মে মাসের ১৬ তারিখে ইংল্যান্ড সফরের জন্য একত্রিত হয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেটাররা। অর্থাৎ, চার মাস ধরে তারা এই জৈব সুরক্ষাবলয়ে রয়েছে, যা মানসিকভাবে অত্যন্ত ক্লান্তিকর। ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের আধিকারিকরা মেনে নিয়েছেন, মুখে কথা করোনা নিয়ে উদ্বেগের কথা বলা হলেও মানসিক ক্লান্তি আসলে একটা বড় ফ্যাক্টর। তাছাড়া, ইংল্যান্ডের টেস্ট সিরিজ খেলেই কোহলিদের কাজ শেষ নয়। বরং কাজের শুরু বলা চলে। কারণ, এখান থেকেই তাঁরা সরাসরি দুবাই চলে যাবেন আইপিএল খেলতে। আইপিএল শেষ হলেই টি-২০ বিশ্বকাপ। তার পরেই নিউজিল্যান্ড সফর। তার ফলে একের পর এক জৈব সুরক্ষাবলয়ে থাকবেন ক্রিকেটাররা। ক্রিকেটারদের এই মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিকে একেবারেই হেলাফেলা করতে নারাজ বিসিসিআই বা ইসিবি। টেস্ট বাতিল হয়ে যাওয়ায় শনিবারই দুবাইয়ের উড়ান ধরছেন কোহলিরা।
তবে ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্টের ভাগ্য কি হবে? সিরিজের ফলাফলই বা কীভাবে নির্ধারিত হবে তা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন উঠছে। পাঁচ টেস্টের চার টেস্টের সিরিজ বলে গণ্য হবে? নাকি আগামী বছর যখন কোহলিরা ইংল্যান্ডে সীমিত ওভারের সিরিজ খেলতে যাবেন তখন এই টেস্ট খেলা হবে এবং তখনই সম্পূর্ণ হবে সিরিজ? এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে গোটা বিষয়টি নিয়ে। কারণ, যে সময়ে ভারত ইংল্যান্ডে সীমিত ওভারের সিরিজ খেলতে যাবে সেই সময় ঘরের মাঠে ঠাসা সূচি জো রুটদের। নিউজিল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলবেন তাঁরা। এই দুই সিরিজের মাঝেই ভারতের বিরুদ্ধে খেলবেন তিনটি একদিনের ম্যাচ এবং তিনটি টি-২০। কয়েকদিন আগেই ইসিবি যে সূচি প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছর জুলাইয়ে ভারত সিরিজ শেষ হওয়া এবং তার পরের সিরিজ শুরু হওয়ার মধ্যে মাত্র চার দিনের ব্যবধান। ফলে সেই সময় কীভাবে এই বাতিল হয়ে যাওয়া টেস্ট খেলা যাবে তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন থাকছে।
আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, করোনার আবহে যদি টেস্ট বাতিল হয়ে যায় তাহলে সেই টেস্ট ‘বাতিল’ বলেই গণ্য হবে। প্রসঙ্গত, যখন ইসিবি প্রথম প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল তখন তারা জানিয়েছিল যে ভারত ম্যাচটি ‘ছেড়ে’ দিয়েছে। সেক্ষেত্রে সিরিজের ফল ২-১ এর বদলে ২-২ হত। কিন্তু বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নিয়ম অনুযায়ী, করোনা আবহে ম্যাচ বাতিল করা হতেই পারে। সেক্ষেত্রে ম্যাচটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বা যে টিম খেলতে অস্বীকার করা হয়েছে তারা হেরে গিয়েছে এমন গণ্য করা যাবে না। সুতরাং এই মুহূর্তে বল একেবারেই আইসিসি-র কোর্টে। যদিও ভারত এবং ইংল্যান্ড বোর্ড আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে কোন সময় এই টেস্ট খেলা যেতে পারে সেই বিষয়ে। এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি তাতে ভারত এই সিরিজ থেকে পেয়েছে ২৬ পয়েন্ট এবং ইংল্যান্ড পেয়েছে ১৪ পয়েন্ট। এই পরিস্থিতিতে যদি শেষ টেস্ট খেলা না হয় বা ইংল্যান্ড সিরিজ হেরে যায় সে ক্ষেত্রে তার বড় প্রভাব পড়তে পারে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট পয়েন্ট টেবলে। আর সেখানেই মূল আপত্তি জানাচ্ছে ইসিবি।