চার উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা উমেশ
ময়ূখ লাহিড়ী
যত বড় তারকাই হোক না কেন, আহত থাকলে তাকে কখনও মাঠে নামিও না। ক্রিকেট বা ফুটবল মাঠে দুঁদে কোচদের মুখে অসংখ্যবার শোনা গিয়েছে এমন কথা। কিন্তু যা তাঁরা বলেননি তা হল, নিজেদের দিনে এই আহত তারকারাই খোঁচা-খাওয়া বাঘ হয়ে উঠতে পারেন। শুক্রবারের ওয়াংখেড়েতে যা করে দেখালেন আন্দ্রে রাসেল। আরব সাগরের পাড়ে যখন সূর্য ডুবছে তখনও নাইট শিবির নিশ্চিত ছিল না যে ড্রেরাস মাঠে নামতে পারবেন কিনা। জামাইকান অলরাউন্ডার শুধু মাঠে নামলেনই না; নামলেন, খেললেন এবং জয় করলেন। প্রথমে ইনিংসের ১৯ তম ওভার বল করতে এসে প্রথম বলেই উইকেট। তাওপর ৩১ বলে অপরাজিত ৭০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস।
শুক্রবার রাসেল যখন ব্যাট করতে নামলেন তখন নাইটদের ইনিংসে সবে সাত ওভার গড়িয়েছে। জেতার জন্য প্রয়োজন ১৩ ওভারে ৮৭ রান। টি-২০ জমানায় যা নেহাতই জলভাত। কিন্তু স্কোরবোর্ড যা দেখাবে না তা হল কি পরিস্থিতিতে রাসেল দলকে কার্যত গর্ত থেকে বের করে নিয়ে এলেন। অজিঙ্ক রাহানে (১১ বলে ১২) এবং বেঙ্কটেশ আইয়ার (৭ বলে ৩) এদিনও ব্যর্থ। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো রাহুল চাহরের প্রথম ওভার। যে ওভারে প্যাভিলিয়নে ফিরলেন শ্রেয়স আইয়ার (১৫ বলে ২৬) এবং নীতীশ রানা (০)। অর্থাৎ, রাসেল যে সময় ক্রিজে এলেন তখন ব্যাটিং অর্ডারে পড়ে শুধু টেল-এন্ডাররা। যাদের মধ্যে সুনীল নারাইন, টিম সাউদি এবং উমেশ যাদব কিছুটা ব্যাটিং করতে পারেন, কিন্তু একার হাতে ম্যাচ জেতাতে অপারগ।
ঠিক এই সময়ই জয়ের রাস্তা তৈরি করলেন রাসেল। প্রথম সাত বলে দু’রান। পরের ২৪ বলে ৬৮। যার মধ্যে ৪৮ রানই এসেছে স্রেফ ছক্কা হাঁকিয়ে। ক্রিজের উল্টোদিকে যার দুর্দান্তভাবে সঙ্গত করে গেলেন স্যাম বিলিংস (২৩ বলে ২৪ রান অপরাজিত)। যার জেরে সাড়ে পাঁচ ওভার হাতে রেখে জিতে নেট রানরেট অনেকটাই চাঙ্গা করে নিল নাইটরা।
তবে রাসেলেরও আগে নাইটদের জয়ের সরণিতে তুলে দিয়ে গিয়েছিলেন আর একজন। উমেশ যাদব। তাঁর জন্য দু’কোটি টাকা খরচ করে কেকেআর যে ভুল করেনি তার প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছেন বিদর্ভের পেসার। এদিন ২৩ রান খরচ করে তুলে নিলেন চার উইকেট। তিন ম্যাচে আপাতত তাঁর শিকারের সংখ্যা আট। এই নিয়ে ছ’বার কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব বা পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে ম্যাচের সেরা হলেন উমেশ। পাশে মানানই টিম সাউদিও (২/৩৬)। যার জেরে একসময় ১০২/৮ হয়ে গিয়েছিল পাঞ্জাব কিংসের স্কোর। যার মধ্যে ন'বলে ৩১ রান ভানুকা রাজাপক্ষের। সেখান থেকে দলের রানকে কিছুটা ভদ্রস্থ জায়গায় নিয়ে যান কাগিসো রাবাদা (১৬ বলে ২৫)। তবে জয়ের মধ্যেও খচখচানি রয়ে গেল শিবম মাভির কুৎসিত বোলিং নিয়ে।