সিরিজের শেষ টেস্টে নেই জাদেজা, বুমরা ও হনুমা; ধোঁয়াশা ঋষভ-অশ্বিনকে নিয়ে
স্পোর্টি ওয়ার্ল্ড নিউজ ডেস্ক২০১১-এর ইংল্যান্ড সফর। অভিশপ্ত সফরে আট জন খেলোয়াড় দেশে ফিরে এসেছিলেন চোট পেয়ে। অবস্থা এমন দাঁড়য়েছিল যে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ফেরাতে হয়েছিল রাহুল দ্রাবিড়কে। সেই সফরেই কেরিয়ারের একমাত্র আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচ খেলেছিলেন জ্যামি।
সাড়ে ছ’বছর পর, সেই দ্রাবিড়ের জন্মদিনের ঠিক পরের দিন, হুবহু একই অবস্থা টিম ইন্ডিয়ার অন্দরমহলে। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো যোগ হয়েছে করোনা অতিমারী। যার জেরে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় দেশ থেকে কাউকে উড়িয়ে আনার পথ বন্ধ।
এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি তাতে অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানের হাতে পুরোপুরি ফিট খেলোয়াড় রয়েছেন মাত্র ১২ জন। বাঁ-হাতের বুড়ো আঙুলের হাড় সরে যাওয়ায় অস্ত্রোপচার হয়েছে রবীন্দ্র জাদেজার। হ্যামস্ট্রিং-এর চোটে ছিটকে গিয়েছেন সিডনি টেস্টের অন্যতম নায়ক হনুমা বিহারী। তলপেটের পেশিতে চোট পেয়ে শেষে টেস্টদে নেই জসপ্রীত বুমরাও। অর্থাৎ, এই তিনজনের বদলি খুঁজতেই হচ্ছে দলের থিঙ্কট্যাঙ্ককে। দলের চিন্তা বাড়িয়েছে রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং ঋষভ পন্থের ফিটনেস। অশ্বিন সিডনি টেস্টের শেষ দিন থেকেই পিঠের ব্যথায় কাবু। অন্যদিকে, ঋষভের চোট হাতে। শুক্রবার থেকে শুরু হতে চলা চতুর্থ টেস্টের আগে তাঁরা কতটা ফিট হতে পারবেন তার উপর জোরালো প্রশ্নচিহ্ন থাকছে। জানা গিয়েছে, নেটে ব্যাট করার সময় কব্জিতে চোট পেয়েছিলেন চেতেশ্বর পুজারা। তবু সেই চোট নিয়েই সিডনিতে দু’ইনিংসেই কার্যকরী রান করেছেন।
এই পরিস্থতিতে দলের অন্দরমহলে ঘোরাফেরা করছে নানারকম অঙ্ক। ওপেনিং-এ রোহিত শর্মাই শুভমান গিলের সঙ্গী হবেন? নাকি রোহিতকে মিডল অর্ডারে এনে ওপেনিং-এ পাঠানো হবে মায়াঙ্ক আগরওয়ালকে? দোটানায় রয়েছে দল। আবার বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, দল এমনিতেই ব্যাকফুটে রয়েছে। এই অবস্থায় আর একবার সুযোগ দেওয়া যেতে পারে পৃথ্বী শ’-কে। কারণ, তাঁর আক্রমণাত্মক ব্যাটিং পাল্টা চাপ তৈরি করতে পারে টিম পেইনদের উপর। এখানেই দোটানার শেষ নয়। প্রশ্ন রয়েছে কিপিং নিয়েও। ঋষভের যা ফিটনেস এবং উইকেটের পিছনে যেভাবে ক্যাচ ছাড়ছেন তাতে তাঁর কিপিং-এর উপর কেউই বিশেষ ভরসা রাখছেন না। বরং সিডনিতে দ্বিতীয় ইনিংসে বদলি কিপার হিসাবে নেমে রীতিমতো নজর কেড়েছেন ঋদ্ধিমান সাহা। কিন্তু সিডিনির দ্বিতীয় ইনিংসের ৯৭ রানের জেরে ঋষভকে পুরোপুরি ছেঁটে ফেলাও যাচ্ছে না। ফলে, দলের একাংশ চাইছে, ঋষভকে ব্যাটসম্যান হিসাবে খেলাতে। কিপিং-এর দায়িত্ব থাক ঋদ্ধির উপর।
জাদেজার বদলি হিসাবে গাব্বায় শার্দুল ঠাকুরের টেস্ট অভিষেক হওয়া একরকম নিশ্চিত। কারণ, লোয়ার অর্ডারে কিছু কার্যকরী রান করতে পারেন শার্দুল। তাই নটরাজনের চেয়ে শার্দুলের উপরেই বেশি ভরসা রাখছে দল। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, নটরাজনের বাঁ-হাতি পেস এবং টানা ইয়র্কার দেওয়ার ক্ষমতা রাহানেদের পেস বিভাগকে বেশি শক্তিশালী করে তুলতে পারে। শেষ টেস্টে দলের একমাত্র স্পিনার হিসাবে অশ্বিনকেই দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা। তবে শেষপর্যন্ত তামিল অফস্পিনার ফিট না হলে কুলদীপ যাদবের কাঁধেই বর্তাবে স্পিন বিভাগের দায়িত্ব। কিন্তু অশ্বিন খেলতে না পারলে তার প্রভাব পড়বে ব্যাটিং বিভাগেও। সেক্ষেত্রে নটরাজনকে টপকে প্রথম একাদশে ঢুকে পড়বেন শার্দুল।
ফিটনেস নিয়ে দলের যেরকম নাজেহাল দশা তাতে প্রাক্তনদের অনেকেই বলছেন, গাব্বায় ভারত নামবে না, নামবে ভারতের ‘এ’ দল। তার জেরেই অ্যাডভান্টেজ অস্ট্রেলিয়া। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ববি সিম্পসনের অস্ট্রেলিয়ার মতো রাহানে অ্যান্ড কোং নিজেদের ছাপিয়ে গিয়ে পারফর্ম করতে পারে কি না সেটাই এখন দেখার।