ইংল্যান্ড বধ ভারতের। শিরোনামে অবশ্যই ভারতের স্পিনাস্ত্র। এই সিরিজ জয়ের পিছনে দুই স্পিনারের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং অক্ষর প্যাটেল। এই দুই স্পিনারের দাপটেই টেস্ট সিরিজ নিজেদের পকেটে তুলে নিল টিম ইন্ডিয়া।
পিচ বিতর্কিত সিরিজ জিতে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারত। লর্ডসে বিরাটরা মুখোমুখি হবে কেইন উইলিয়ামসনদের। এই সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভারত হেরে যাওযার পরেই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে যাওয়া নিয়ে একটা আশঙ্কার মেঘ দেখা দেয়। ঠিক পরের ম্যাচেই চেন্নাই থেকে ঘুরে দাঁড়ায় বিরাটরা। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি রোহিতদের। পরপর ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের পকেটে তুলে নেওযার পাশাপাশি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের টিকিট পেয়ে গেলেন বিরাটরা।
এই সিরিজের শুরু থেকে পিচ নিয়ে খুব চর্চা হয়েছিল। বিতর্কও হয়েছিল। যা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন অনেকে। তালিকায় রয়েছেন ক্যাপ্টেন কোহলিও। ইংল্যান্ড ক্রিকেটারদের এই ধরণের অযুহাত কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যাচ্ছিল না। সিরিজ জিতে যোগ্য জবাব দিল ভারতীয় ক্রিকেটাররা। স্পিন সহায়ক পিচে কী ভাবে খেলতে হয তা দেখিয়ে দিলেন ঋষভ পন্থ, ওয়াশিংটন সুন্দররা।
প্রথম দিন থেকেই এগিয়ে ছিল ভারত। ইংল্যান্ডকে মাত্র ২০৫ রানেই আটকে দেয় অশ্বিনরা। সেদিন একেবারে শেষ মুহূর্তে গিলের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ভারত। তবে দ্বিতীয় দিনের শুরু থেকেই ফর্মে ফেরে ভারত। অবশ্য পরপর উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়ে দলকে তুলে ধরেন ঋষভ পন্থ। তাঁর গুরুত্বপূর্ণ শতরানে ভর করে ঘুরে দাঁড়ায় টিম ইন্ডিয়া।
এখানেই থেমে থাকেনি ভারত। দ্বিতীয় দিনের শেষের দিকে ১০১ রানের ফিরে যান পন্থ। সেই পরিস্থিতি থেকে দলকে একা নেতৃত্ব দেন ওয়াশিংটন সুন্দর। তৃতীয় দিনের শুরু থেকেই ইংল্যান্ডকে চাপে রাখেন সুন্দর। অবশ্য অল্পের জন্য শতরান হাতছাড়া করেন তিনি। ভাগ্য সহায় থাকলে কেরিযারের প্রথম শতরান পেয়ে যেতে পারতেন তিনি। তবে হল না একমাত্র মহম্মদ সিরাজ, ইশান্ত শর্মার জন্য। মাত্র পাঁচ বলের মধ্যে পরপর তিনটি উইকেটের পতন হাতছাড়া করে সুন্দরের শতরান। ১৭৪ বলে ৯৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন সুন্দর। এছাড়াও অল্পের জন্য অর্ধশতরান হাতছাড়া করেন অক্ষর। ৯৭ বলে ৪৩ রান করে ফিরে যান তিনি। ভারত তোলে ৩৬৫ রান। ১৬০ রানে এগিয়ে থাকে ভারত।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে ইংল্যান্ড। কিন্তু শুরু থেকেই ভারতীয় স্পিনাররা চাপ দিতে থাকে। সেই চাপ সহ্য করতে না পেরে তাদের কাছে আত্মসমর্পন করে। সিবলে, বেয়ারস্টোদের রান দেখে মনে হতেই পারে সব অংক পরীক্ষায় সব অংক ভুল হয়েছে। তবে অধিনায়ক রুট কোনও রকমে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ৭২ বলে ৩০ রানেই ইনিংল খেলেন তিনি। রুট ছাড়া ডান লরেন্স সম্মানজনক রান করেন। অর্ধশতরান করেন তিনি। এছাড়া আর কোনও ইংরেজ ক্রিকেটার সেই ভাবে রান করতে পারেননি। বলা ভালো রান করতে দেননি অশ্বিন এবং অক্ষর। এই দুই স্পিনারই পাঁচটি করে উইকেট নেন। আর কোনও বোলারকে কষ্ট করতে হয়নি। এই দুই স্পিনারের দাপটে মাত্র ১৩৫ রানেই গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস। ইনিংস সহ ২৫ রানে জয়ী ভারত। ম্যাচের সেরা হয়েছেন ঋষভ পন্থ এবং সিরিজের সেরা হয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ জিতে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে জায়গা করে নিলেন বিরাটরা। ফাইনালে প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। লর্ডসে ফাইনালে উলিয়ামসনদের আটকানোই টার্গেট টিম ইন্ডিয়ার সামনে।