চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারেন উইলিয়ামসন, ঋদ্ধিমানরা
স্পোর্টি ওয়ার্ল্ড নিউজ ডেস্কসমর্থকদের সেই গগনভেদী চিৎকার নেই। চার-ছক্কার বৃষ্টির তালে তাল মিলিয়ে উৎসব পালনের বাজনা নেই। নেই কোনও চিয়ারলিডারও। আছে শুধু ক্রিকেটটাই। সঙ্গে রয়েছে রাসেলের মাসল পাওয়ার দেখার স্বপ্ন, পুরোনো সুনীল নারিনকে ছন্দে দেখার প্রত্যাশা।
রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় চলতি আইপিএলে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। প্রতিপক্ষ গতবারের তৃতীয় স্থানাধিকারী দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। মুখোমুখি সাক্ষাতে পাল্লা ভারী কেকেআরের। ১২ বার জিতেছে কিং খানের দল। সানদের জয় সেখানে সাতবার। এমনকি, দুবাইয়ে গত আইপিএলে দুইবারই ডেভিড ওয়ার্নারের দলকে হারিয়েছেন নাইটরা।
বাইশগজের যুদ্ধে নামার আগে এই পরিসংখ্যানগুলি অবশ্য শুধুমাত্র মানসিক তৃপ্তির জন্যই কাজে আসে। এগুলির ওপর ভর করে কেকেআর যে এগিয়ে রয়েছে, সে কথা বলা মানে চরম মুর্খামির পরিচয় দেওয়া। তাই লড়াইটা হবে হাড্ডাহাড্ডি, এটাই অনুমেয়।
ম্যাচের শুরুতেই নাইট যোদ্ধাদের প্রস্তুত থাকতে হবে ডেভিড ওয়ার্নার এবং জনি বেয়ারস্টোর আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের বিরুদ্ধে। এছাড়া মণীশ পান্ডে, কেন উইলিয়ামসনের মতো আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেটার রয়েছে সানদের হাতে। রয়েছেন প্রিয়ম গার্গ, আবদুল সামাদের তরুণ রক্ত। আর বোলিং বিভাগ তো অন্যতম সেরা। ভুবনেশ্বর কুমার, টি নটরাজন, সন্দীপ শর্মার মতো বিশ্বমানের পেসারের পাশাপাশি এই মুহূর্তে সবথেকে ভয়ঙ্কর স্পিনার রশিদ খানও মুখিয়ে রয়েছেন এই মঞ্চে নিজেদের আরও একবার প্রমাণ করতে।
শেষ দুইবারের নাইটমেয়ার ভুলতে অবশ্য মরিয়া নাইট রাইডার্সও। শেষ দুই আইপিএলে পঞ্চম স্থানে শেষ করেছিল নাইট ব্রিগেড। প্লে-অফে না ওঠার সেই দুঃখ ঘোচাতে এবার প্রাণপণ চেষ্টা চালাবে ইয়ন মরগ্যান অ্যান্ড কোং।
দল নিয়ে বিশেষ করে ব্যাটিং কম্বিনেশনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো বরাবরই নাইট ম্যানেজমেন্টের অভ্যাস। এবারও হয়তো সেই পথেই হাঁটবেন ব্রেন্ডন ম্যাককালামের দলবল। হলফ করে কেউ বলতে পারবেন না নাইটদের ব্যাটিং অর্ডার। তবে পঞ্জাবের তরুণ তারকা শুভমন গিলের ইনিংস সূচনা করা একপ্রকার নিশ্চিত। সঙ্গে রাহুল ত্রিপাঠী বা সুনীল নারিনের মধ্যে যে কেউ আসতে পারেন। তিন নম্বরে রয়েছেন নীতিশ রানা। চারে মরগ্যান নিজে আসবেন নাকি দীনেশ কার্তিককে পাঠাবেন, তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছে গতবারও। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে কী করেন, সেটাই এখন দেখার।
প্রথম একাদশে বিদেশি ক্রিকেটার চয়ন করা কেকেআর ম্যানেজমেন্টের কাছে অন্যতম চ্যালেঞ্জ। অধিনায়ক মরগ্যান ছাড়া বাকি তিনজন কে হবেন, তা নিয়ে বেশ ধন্দে নাইট শিবির। এই লড়াইয়ে রয়েছেন প্যাট কামিন্স, আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারিন এবং সাকিব আল হাসানের পাশাপাশি লকি ফার্গুসনও। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা প্রথম একাদশে কার্যত নিশ্চিত। শিভম মাভির সঙ্গে লড়াইয়ে থাকবেন কমলেশ নাগারকোটি। একজন স্পেশাল্টি স্পিনার নিয়েও কিছুটা চিন্তায় নাইটরা। গতবার দুরন্ত পারফর্ম করা বরুণ চক্রবর্তী অবশ্য এক্ষেত্রে পোড়খাওয়া হরভজন সিংয়ের থেকে দৌড়ে এগিয়ে। তবে একজন পেসার কম খেলিয়ে তিন স্পিনারেও যেতে পারে দু’বারের আইপিএল চ্যাম্পিয়নরা। সেক্ষেত্রে রাসেলকে বল হাতে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে।
গতবার মাঝপথে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পেয়েছিলেন ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ী নেতা ইয়ন মরগ্যান। এবার মরশুমের শুরু থেকেই দলকে বুঝে নেওয়ার সময় পেয়েছেন তিনি। তবে সাফল্য পেতে হলে অতিরিক্ত রাসেল নির্ভরতা কাটিয়ে উঠতে হবে কেকেআরকে। গতবার রাসেলের পাশাপাশি ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারেননি কার্তিকও। সিনিয়র ক্রিকেটার হিসাবে এবার তাঁকেও বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে।
বাংলার নির্বাচন কিন্তু ক্রিকেটপ্রেমী আমজনতার মনে নাইটদের নিয়ে উত্তেজনার পারদ একটুও কমাতে পারেনি। এবার মরগ্যান বাহিনী পালা। কলকাতার প্রিয় দলের হাল ফেরানো, বঙ্গ ক্রিকেটপ্রেমীদের মনোরঞ্জন সর্বপরি সাফল্য। দামামা কিন্তু বেজে গিয়েছে। যুদ্ধ শুরুর অপেক্ষা মাত্র কয়েক ঘণ্টার।