পৃথ্বী শ এবং শিখর ধাওয়ানের দাপটে ফের হারের ট্র্যাকে ফিরে এল কলকাতা নাইট রাইডার্স। দিল্লি ক্যাপিটালসের দুই ওপেনারের সামনে কার্যত অসহায় আত্মসমর্পণ করল মরগ্যান বাহিনী। ২১ বল বাকি থাকতে ৭ উইকেটের লজ্জার হার মাথায় নিয়ে মাঠ ছাড়লেন নাইটরা।
ব্যাটিং থেকে বোলিং, কার্যত সব বিভাগেই ব্যর্থ কেকেআর। টেসে জিতে নাইটদের ব্যাট করতে পাঠান দিল্লির অধিনায়ক ঋষভ পন্থ। ভালো শুরু করেও উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে চলে আসেন নীতিশ রানা। অক্ষর প্যাটেলের ওভারে তৃতীয় বলে রিভার্স সুইপে ছক্কা হাঁকান তিনি। পরের বলেই কোন যুক্তিতে স্টেপ আউট করতে আসেন, তার ব্যাখ্যা হয়তো স্বয়ং রানাও দিতে পারবেন না। ১২ বলে ১৫ রান করে ফেরেন তিনি।
সেট হয়ে যাওয়ার পরও উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসাটা তো অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন রাহুল ত্রিপাঠী। এদিন তার অন্যথা হয়নি। ১৭ বলে ১৯ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। পরের ওভারেই অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান এবং সুনীল নারিনের উইকেট হারায় কেকেআর। দুই বিদেশি তারকাই খাতা খুলতে ব্যর্থ।
এর কিছুক্ষণ পরই সাজঘরে ফেরেন অপর ওপেনার শুভমান গিল। তবে ব্যর্থতার সরণি থেকে ফিরে রানের খরা কাটালেন তিনি। ৩৮ বলে ৪৩ রান করলেন এদিন। ধারাবাহিকতার চূড়ান্ত অভাব স্পষ্ট দীনেশ কার্তিকের উইলোতেও। অযথা রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে লেগবিফোরের শিকার হন তিনি।
এদিন উইকেটে থিতু হতে অনেকটা সময় নেন রাসেল। প্রথম ১৮ বলের মোকাবিলা করে তিনি করেন মাত্র ১৬ রান। কার্তিক আউট হতেই টপ গিয়ারে চলে যান ক্যারিবিয়ান তারকা। পরবর্তী ৯ বলে করেন ২৯ রান। শেষ পর্যন্ত চারটি ছক্কা এবং দুটি চারের সাহায্যে ৪৫ রানে অপরাজিত থেকে দলকে দেড়শোর গণ্ডি টপকে দেন রাসেল। ১৩ বলে ১১ রান করে অপরাজিত থাকেন কামিন্স। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট খুইয়ে ১৫৪ রান তোলে কিং খানের দল। দিল্লির হয়ে ললিত যাদব এবং অক্ষর প্যাটেল দুটি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পেয়েছেন আভেশ খান ও মার্কাস স্টোইনিস।
পৃথ্বী কতটা ভয়ঙ্কর হতে চলেছেন, তার আভাস পাওয়া যায় প্রথম ওভারেই। ওয়াইড দিয়ে শুরু করা শিবম মাভিকে ওভারের বাকি সবকটি বলেই বাউন্ডারি হজম করতে হয়। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ২৫ রান নিয়ে বড় জয়ের ইঙ্গিত দেয় ক্যাপিটালস। তবে এখানেই থেমে থাকেননি পৃথ্বী। গব্বরের সঙ্গে ১৩২ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ম্যাচ হাতের মুঠোয় এনে দেন তিনি। ৪১ বলে মারকাটারি ৮২ রানের ইনিংস খেলে আউট হন ম্যাচের নায়ক পৃথ্বী। তার আগেই অবশ্য প্যাভিলিয়নে ফেরেন ধাওয়ান। ৪৭ বলে ৪৬ রান করেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি তারকা। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে পন্থও নিজের উইকেট খোয়ান ৮ বলে ১৬ রান করার পর। তবে হেটমেয়ার সঙ্গে নিয়ে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন স্টোইনিস।
এই হারের পরে ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সের পাশাপাশি আবারও কাঠগড়ায় মরগ্যানের অধিনায়কত্ব। দুরন্ত ফর্মে থাকা পৃথ্বী এবং ধাওয়ানের সামনে কেন প্যাট কামিন্সের হাতে নতুন বল তুলে দিলেন না, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়ে। নাইটদের হয়ে এদিন তিনটি উইকেটই নিয়েছেন কামিন্স। শুরুতে কামিন্সের ওপর ভরসা রাখলে হয়তো দিল্লির দুই ওপেনার ক্রিজে সেট হওয়ার সুযোগ পেতেন না, এরকমটাই ধারণা বিশেষজ্ঞদের।