বিশেষজ্ঞদের প্রশংসা পাচ্ছে রোহিত-গিলের ওপেনিং জুটি
ময়ূখ লাহিড়ীঠিকই বলেছিলেন নেভিল কার্ডাস। স্কোরবোর্ডের নিরিখে একজন ক্রিকেটারের বিচার করা সত্যিই মুশকিল। ঠিক যে কারণে মুশকিল শনিবারের হ্যাম্পশায়ার বোলে ভারতীয় ব্যাটিং-এর পারফরম্যান্স বিচার করা। ৬৪.৪ ওভার শেষে তিন উইকেটে ১৪৬ রান। রানরেট ২.২৫। অঙ্কের হিসাবে একেবারেই সাদামাঠা পারফরম্যান্স। কিন্তু এই অঙ্ক দিয়ে যা বোঝা যাবে না তা হল গোটা দিন ধরে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের লড়াই। প্রতিকূল আবহাওয়ার বিরুদ্ধে লড়াই। বারবার খেলা বন্ধ হওয়ায় মনঃসংযোগের সঙ্গে লড়াই। আর অতি অবশ্যই বিষাক্ত কিউই বোলিং-এর বিরুদ্ধে লড়াই।
শনিবার সকালে কেন উইলিয়ামসন যখন টস জিতে টিম ইন্ডিয়াকে ব্যাট করতে পাঠালেন তখন অনেকেরই মনে উঁকি দিচ্ছিল অ্যাডিলেডের ভূত। ৩৬ রানে অল আউটের ভূত। রোহিত শর্মা বা শুভমান গিল কেউই সেই ম্যাচে খেলেননি। সম্ভবত সেই কারণেই নেমেছিলেন একেবারে ইস্পাতকঠিন মানসিকতা নিয়ে। মেঘলা, স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া, ঘাস ছেড়ে রাখা পিচ, ভেজা আউটফিল্ড এবং বিপক্ষের পাঁচ পেসারে সাজানো আক্রমণ। সেসব মাথায় রেখেই নেমেছিলেন দুই ভারতীয় ওপেনার। সাবধানী, কিন্তু রক্ষণাত্মক নন। তার জেরেই প্রথম ১০ ওভারে ৩৭ রান তুলে ফেলেছিল ভারত। দেড় ঘণ্টা শেষে ২০ ওভারে ৬২ রান। কিন্তু সেখান থেকেই ম্যাচে ফিরল নিউজিল্যান্ড। কাইল জেমিসনের পাঁচ ওভারের একটিও বল খেলার সুযোগ পাননি রোহিত। তাঁর ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলেই আউটসুইঙ্গারে খোঁচা দিয়ে ফিরলেন হিটম্যান (৩৪)। কিন্তু বলের পালিশ তোলার প্রাথমিক কাজটুকু ততক্ষণে অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। সামান্য পরেই প্যাভিলিয়নে শুভমানও (২৮)। নেইল ওয়াগনারের সিম মুভমেন্ট বুঝে ওঠার আগেই ধরা পড়লেন উইকেটের পিছনে। চেতেশ্বর পুজারা প্রথম রান করতে নিলেন ৩৬ বল। কিন্তু শেষপর্যন্ত আট রানের বেশি করতে পারেননি। উল্টে ওখান থেকেই ভারতের মাথায় চেপে বসতে থাকলেন উইলিয়ামসনরা। এরপর মন্দ আলোর জন্য বারবার খেলা বন্ধ হলেও মনঃসংযোগ হারাননি কোহলি, রাহানেরা। অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেটে ৫৮ রান যোগ করেছেন ভারতীয় অধিনায়ক ও তাঁর ডেপুটি। দিনের শেষে কোহলি অপরাজিত রয়েছেন ৪৪ রানে। রাহানে ব্যাট করছেন ২৯ রানে। একটি করে উইকেট নিয়েছেন জেমিসন, ওয়াগনার এবং বোল্ট।
পরিবেশের সুবিধা কাজে লাগাতে না পারার জন্য সুনীল গাভাসকর, নাসের হুসেন, ইয়ান বিশপ, মাইকেল আথারটনের মতো বিশেষজ্ঞরা অবশ্য দায়ী করছেন কিউই ওপেনিং বোলারদের এলোমেলো লাইন-লেংথকে। তবে জেসিমনের বাউন্স এবং কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের সুইং যেভাবে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের বিব্রত করেছে তা হাসি ফোটাতেই পারে কিউই থিঙ্কট্যাঙ্কের মুখে। আর সেখানেই চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করে রয়েছে কোহলি, রাহানেদের জন্য। রবিবার সকালে এই জুটি দলকে কতদূর টানতে পারে তার উপর অনেকটাই নির্ভর করছে ম্যাচের ভবিষ্যৎ।