পরিবেশের সুবিধা কাজে লাগাতে ব্যর্থ ভারতীয় পেসাররা
স্পোর্টি ওয়ার্ল্ড নিউজ ডেস্কনিউজিল্যান্ড ড্রেসিংরুমে ‘কিলা’ নামে পরিচিত তিনি। যা কিনা ‘কিলা’ বা ‘ঘাতক’-এর কথ্য সংস্করণ। সেই ‘কিলা’ অর্থাৎ কাইল জেমিসন রবিবার তাঁর শিকার হিসাবে বেছে নিলেন টিম ইন্ডিয়াকে। ৩১ রানে পাঁচ উইকেট নিয়ে কার্যত একার হাতেই দুরমুশ করলেন বিরাট কোহলিদের। তার জেরেই আগের দিনের ১৪৬/৩ থেকে শুরু করে এদিন ২১৭ রানেই গুটিয়ে গেল ভারতের ইনিংস। আগুনে বোলিং করে যে ভিত জেমিসন গড়ে দিয়েছেন তার উপর ভর করেই দিনের শেষে দু’উইকেটে ১০১ রান তুলে ফেলেছে কিউইরা। ভারতের থেকে আপাতত মাত্র ১১৬ রানে পিছিয়ে তারা। হাতে আট উইকেট।
শনিবার প্রথম সেশনে কিছুটা এলোমেলো বোলিং করেছিলেন টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্টরা। রবিবার সকালে আর সেই ভুল করেননি জেমিসনরা। আঁটোসাঁটো লাইন-লেংথ আর ক্রমাগত আউটসুইং-এ বারবার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছিলেন কোহিলি, রাহানেদের দিকে। হ্যাম্পশায়ার বোলের ভারতীয় সমর্থকরা আশায় ছিলেন, প্রথম সেশনে ভারতকে চালকের আসনে বসিয়ে দেবেন ভারত অধিনায়ক এবং তাঁর ডেপুটি। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে দিতে ওভার চারেকের বেশি লাগেনি কিউইদের। আগের দিনের রানের সঙ্গে কোনও রান যোগ না করেই জেমিসনের বলে ফিরলেন কোহলি (৪৪)। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি। ছ’নমরে নামা ঋষভ পন্থ প্রথম রান করতে নিলেন ২০ বল। তারপরেই কুৎসিত ফুটওয়ার্কের খেসারত দিয়ে অফস্টাম্পের অনেক বাইরের বলে চালাতে গিয়ে আউট হলেন। উল্টোদিকে বরং অনেক জমাট দেখাচ্ছিল রাহানেকে। কিন্তু তাঁকে রীতিমতো পরিকল্পনা করে, ফাঁদ পেতে প্যাভিলিয়নে ফেরালেন ওয়াগনার। শর্ট বলে স্বচ্ছন্দভাবেই পুল করছিলেন জিঙ্কস। তা দেখেই স্কোয়্যার লেগ এবং ডিপ স্কোয়্যার লেগ রেখেছিলেন ওয়াগনার। পরের বলেই ফের পুল করতে গিয়ে স্কোয়্যার লেগে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন রাহানে (৪৯)। অশ্বিন (২২) এবং জাদেজা (১৫) কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন দলের রানকে আড়াইশোর আশেপাশে নিয়ে যাওয়ার। কিন্তু সফল হননি। উল্টে পরপর দু’বলে ইশান্ত শর্মা (৪) এবং জসপ্রীত বুমরাকে (০) ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের মুখে চলে এসেছিলেন জেমিসন। কিন্তু মহম্মদ শামির বদান্যতায় তা আর হয়নি।
পুরোনো বলেও প্রায় আড়াই ডিগ্রি সুইং আদায় করে নিচ্ছিলেন কিউই বোলাররা। কিন্তু ইশান্ত, বুমরারা সেরকম সুইং আদায় করতে পারেননি। তার জেরেই ক্রিজে জাঁকিয়ে বসেছিল টম ল্যাথাম এবং ডেভন কনওয়ের ওপেনিং জুটি। শেষপর্যন্ত অশ্বিনের ধুরন্ধর বোলিং-এর ফাঁদে পা দিয়ে আউট হন ল্যাথাম (৩০)। শামি নজরকাড়া বোলিং করলেও উইকেট পাননি। কিন্তু বুমরাকে খেলতে সেভাবে অসুবিধায় পড়তে হয়নি কিউইদের। শেষ বেলায় ইশান্ত ফেরান কনওয়েকে (৫৪)।
পিচে এখনও যথেষ্ট সাহায্য মজুত রয়েছে পেসারদের জন্য। তার জেরেই ১০১ রান তুলতে ৪৯ ওভার নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। নির্ধারিত সময়ের সামান্য আগেই আম্পায়াররা খেলা থামিয়ে দেন আলো কম থাকার জন্য। পরিবেশের ফায়দা যদি ভারতীয় পেসাররা কাজে লাগাতে পারেন তাহলে ভালো। নাহলে টিম ইন্ডিয়ার জন্য ম্যাচের ভবিষ্যৎ সাউদাম্পটনের আকাশের মতোই মেঘলা দেখাচ্ছে।