অভিষেকেই জাত চেনালেন ইশান-সুর্্যকুমার; নজর কাড়লেন পৃথ্বীও
স্পোর্টি ওয়ার্ল্ড নিউজ ডেস্কদ্বিতীয় সারির দল পাঠিয়ে শ্রীলঙ্কাকে অপমান করছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। দিনকয়েক আগে এমনই মন্তব্য করেছিলেন অর্জুনা রণতুঙ্গা। সেই তথাকথিত দ্বিতীয় সারির দল যে এভাবে শ্রীলঙ্কাকে সাত উইকেটে দুমড়ে দেবে তা সম্ভবত ভাবেননি দ্বীপরাষ্ট্রের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। উপমহাদেশীয় পরিবেশে ২৬২-কে খারাপ স্কোর বলা যায় না। কিন্তু সাতেরও বেশি রানরেট রেখে সেই রান ৮০ বল বাকি থাকতেই তুলে নিল টিম ইন্ডিয়া। অধিনায়ক হিসাবে তাঁর কাঁধে আস্থার হাত রেখে নির্বাচকরা যে ভুল করেননি তা দেখিয়ে দিলেন শিখর ধাওয়ান। আর রবি শাস্ত্রীর চেয়ারে যে তিনি যে কোনও দিন বসতে পারেন তা প্রমাণ করা শুরু করে দিলেন রাহুল দ্রাবিড়।
নিজের পেশাদার জীবনে শান্ত অথচ অসম্ভব জেদি ক্রিকেটার হিসাবে পরিচিত ছিলেন জ্যামি। টিম ইন্ডিয়ার দায়িত্ব নিয়ে ড্রেসিংরুমেও অবিকল সেই ঘরানার মনোভাব আমদানি করেছেন। পৃথ্বী শ’-এর কথাই ধরা যাক। তাঁ প্রতিভা নিয়ে কোনওদিনই প্রশ্ন ছিল না। সমস্যা ছিল মানসিকতা এবং ধারাবাহিকতা নিয়ে। বিরাট-শাস্ত্রীর দলে যথেষ্ট সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু অধিনায়ক বা কোচ কেউই তাঁর রোগের দাওয়াই বাতলাতে পারেননি। রোগ যে পৃথ্বী পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন তা হয়তো এখনই বলা যাবে না। কিন্তু এদিন ২৪ বলে ৪৩ রানের যে ইনিংস খেললেন তা এককথায় চোখে লেগে থাকার মতো। দ্রাবিড়ের কোচিং-এ লক্ষণীয় উন্নতি করেছেন ফুটওয়ার্কে। আর সেই ফুটওয়ার্ক কাজে লাগিয়েই ন’টি চোখধাঁধানো বাউন্ডারি মারলেন মুম্বইয়ের ওপেনার।
জন্মদিনে অভিষেকের সুযোগ সকলের ভাগ্যে ঘটে না। কিন্তু সেই সু্যোগই এদিন পেয়ে গিয়েছিলেন ঈশান কিষাণ। আর ২৩ বছরের জন্মদিন স্মরণীয় করে রাখলেন ঝাড়খন্ডের কিপিং অলরাউন্ডার। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড সিরিজে টি-২০ অভিষেকে অর্ধশতরান করেছিলেন। এবার একদিনের আন্তর্জাতিক অভিষেকেও অর্ধশতরান হাঁকালেন ঈশান। ৪২ বলে ৫৯ রানের ইনিংস অবশ্য সুযোগবিহীন ছিল না। কিন্তু ওই ইনিংসই ম্যাচ পুরোপুরি টেনে নিয়ে এল ভারতের দিকে।
বরং সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারলেন না মণীশ পাণ্ডে (২৬)। অধিনায়কের সঙ্গে জুটি বেঁধে ম্যাচ জেতানোর সুবর্ণ সুযোগ ফস্কালেন। কিন্তু শিখর দুর্দান্তভাবেই পালন করলেন ‘শিট অ্যাঙ্কর’-এর ভূমিকা। বাড়তি আগ্রাসন না দেখিয়েই খেলে গেলেন ৯৫ বলে ৮৬ রানের অপরাজিত ইনিংস। একইসঙ্গে একদিনের আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে পূর্ণ করলেন ছ’হাজার রান। পাঁচ নম্বরে নেমে অভিষেকে নজর কাড়লেন সূর্যকুমার যাদবও (২০ বলে ৩১ অপরাজিত)।
ম্যাচের শুরুটা অবশ্য আশানুরূপ হয়নি ভারতের। ন’ওভারে ৪৯ রান তুলে ফেলেছিলেন শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার অভিষ্কা ফার্নান্ডো (৩৩) ও মিনোদ ভানুকা (২৭)। কিন্তু নিজের প্রথম বলে যুজবেন্দ্র চাহাল অভিষ্কাকে ফেরাতেই ম্যাচে ফেরে ভারত। ১৭ তম ওভারে কুলদীপ যাদব ফেরান ভানুকা রাজাপক্ষে (২৪) ও মিনোদকে। এরপর আর সেভাবে লম্বা জুটি গড়তে পারেনি সিংহলীরা। চরিত অসালঙ্কা (৩৮) এবং অধিনায়ক দাসুন শানাকার (৩৯) দৌলতে দু’শোর গণ্ডি পেরিয়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। শেষদিকে চালিয়ে খেলে দলকে আড়াইশোর ওপারে নিয়ে যান চামিকা করুণারত্নে (৩৫ বলে ৪৩ অপরাজিত)। বল হাতে সফল দীপক চাহর (২/৩৭), কুলদীপ (২/৪৮) এবং চাহল (২/৫২)। তবে জয়ের মধ্যেও খচখচানি থাকল ভুবনেশ্বর কুমারের ফর্ম নিয়ে। ন’ওভারে ৬৩ রান খরচ করলেও উইকেট তুলতে পারেননি টিম ইন্ডিয়ার সহ-অধিনায়ক।