অধিনায়কোচিত ইনিংস শিখরের; নজর কাড়লেন চাহর, চাহল ও বরুণ
স্পোর্টি ওয়ার্ল্ড নিউজ ডেস্ক“স্কোরবোর্ডে মাত্র ১৫৭ রান, চিন্তায় ছিলেন না?”
“আমরা যা-ই রান করি ওদেরকে ওভার-প্রতি ছ’রানের বেশি তুলতে হত। সেই জায়গাকেই কাজে লাগিয়েছি।“
বছর ১৪ আগে টি-২০ বিশ্বকাপ ফাইনালে পাকিস্তানকে হারানোর পর এমনই ছিল ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির প্রতিক্রিয়া। ১৪ বছর পরেও যে তাঁর ফর্মুলা একইরকম কার্যকর তা দেখিয়ে দিল রাহুল দ্রাবিড় এবং শিখর ধাওয়ানের দল। রবিবারের প্রেমদাসায় ১৬৪ রান সম্বল করেই ৩৮ রানে হারিয়ে দিল শ্রীলঙ্কাকে। ন’বল বাকি থাকতেই ১২৬ রানে অল আউট দাসুন শানাকার দল।
ম্যাচের শুরুতে অবশ্য শানাকারাই ফ্রন্টফুটে ছিলেন। টি-২০ অভিষেকে প্রথম বলেই প্যাভিলিয়নে পৃথ্বী শ’। কিন্তু সেখান থেকে অবস্থা সামাল দিতে শুরু করলেন অধিনায়ক। সঙ্গী সঞ্জু স্যামসন। দ্বিতীয় উইকেটে ৩৬ বলে ৫০ রান যোগ করে মজবুত ভিত গড়ে দিয়েছিলেন দু’জনে। কিন্তু হসরঙ্গার আচমকা ঢুকে আসা বল সামলাতে পারেননি সঞ্জু (২০ বলে ২৭ রান)। চার নম্বরে নামা সূর্যকুমার যাদবের আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা যতই কম হোক না কেন, মুম্বই, কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে খেলার দৌলতে টি-২০ ম্যাচের অভিজ্ঞতায় কোনও খামতি নেই। উইকেটের চরিত্র বুঝে স্ট্রোক খেলছিলেন। তৃতীয় উইকেটে আট ওভারে ৬২ রান যোগ করেছিলেন শিখরের সঙ্গে। অর্ধশতরান যখন নিশ্চিত দেখাচ্ছে ঠিক সেই সময়ই করুণারত্নেকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডিপ স্কোয়্যার লেগে ধরা পড়লেন শিখর (৩৬ বলে ৪৬ রান)। সূর্যকুমার অবশ্য কেরিয়ারের চতুর্থ টি-২০ আন্তর্জাতিকেই দ্বিতীয় অর্ধশতরান পূর্ণ করলেন। কিন্তু রানরেট বাড়াতে গিয়ে ফিরলেন ৩৪ বলে ৫০ রান করে। পরপর দু’ওভারে শিখর ও সূর্যকুমারকে ফিরিয়ে শ্রীলঙ্কা যে চাপ তৈরি করেছিল সেই চাপ কেটে আর বেরোতে পারেনি টিম ইন্ডিয়ার লোয়ার মিডল অর্ডার। হার্দিক পাণ্ড্য (১২ বলে ১০ রান) এখনও ম্যাচফিট বলেই মনে হচ্ছে না। তাও ঈশান কিষাণের (১৪ বলে ২০ অপরাজিত) সৌজন্য দল ১৬০-এর গণ্ডি পেরিয়ে গেল। দুষ্মন্ত চামিরা (২/২৪), হসরঙ্গারা (২/২৮) শেষ পাঁচ ওভারে ৪৩ রানের বেশি তুলতে দেননি ভারতকে।
১৬৫ রান তাড়া করতে গিয়ে পাওয়ার প্লে পর্যন্ত প্রবলভাবেই ম্যাচে ছিল শ্রীলঙ্কা। ছ’ওভার শেষে মিনোদ ভানুকার (৭ বলে ১০ রান) উইকেট হারিয়ে ৪৬ রান তুলে নিয়েছিল তারা। কিন্তু যুজবেন্দ্র চাহল ও ভুবনেশ্বর কুমার পরপর দু’ওভারে ধনঞ্জয় ডি সিলভা (১০ বলে ৯) এবং অভীষ্কা ফার্নান্ডোকে (২৩ বলে ২৬) ফেরাতেই জোর ধাক্কা খায় শ্রীলঙ্কা। একদিনের সিরিজে নজরকাড়া ব্যাটিং করা চরিথ অসালঙ্কা (২৬ বলে ৪৪) জোরদার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু উল্টোপ্রান্তে নিয়মিত উইকেট পড়তে থাকায় তাঁর চেষ্টা সফল হয়নি। পরবর্তী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে অধিনায়ক শানাকা (১৪ বলে ১৬) ছাড়া কেউ দু’অঙ্কের রানই পাননি। শেষ সাত উইকেট মাত্র ৩৬ রানে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। যার নেপথ্যে ভুবির (৪/২২) দুর্দান্ত বোলিং। অন্য প্রান্ত থেকে চাহল স্পিনের এমন জাল তৈরি করলেন যা কেটে বেরোতেই পারল না শ্রীলঙ্কা। প্রয়োজনের সময় গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুললেন দীপক চাহরও (২/২৪)। অভিষেকে বেশকিছু নজরকাড়া ডেলিভারি বেরোল বরুণ চক্রবর্তীর (১/২৮) হাত থেকেও। এছাড়া। একটি করে উইকেট পেয়েছেন পাণ্ড্য ভাইয়েরা।
সিরিজের পরের ম্যাচ মঙ্গলবার।