যোগ্য সঙ্গত পুজারা, রাহুলের
স্পোর্টি ওয়ার্ল্ড নিউজ ডেস্কশচীন তেন্ডুলকরের বিদায়ী সিরিজে ইডেনে অভিষেক। আর অভিষেকেই নজরকাড়া শতরান। পরের টেস্টে ঘরের মাঠ ওয়াংখেড়েতেও দুরন্ত সেঞ্চুরি। কিন্তু তারপর থেকেই বড় রান হাতছাড়া করছিলেন। বেশ কয়েকবার উইকেট দিয়ে এসেছিলেন দায়সারা শটে। বাদও পড়েছিলেন টেস্ট দল থেকে। কিন্তু ওপেনিং-এ উঠে আসার পর থেকেই অন্য মেজাজে দেখা যাচ্ছিল রোহিত শর্মাকে। সীমিত ওভারের ম্যাচ হোক বা লাল বলের ক্রিকেট, নতুন বল যে বরাবরই তাঁর পছন্দের তা বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন। কিন্তু চলতি সিরিজে ভালো শুরু করেও বড় রান পাচ্ছিলেন না। ওভালের মনমতো ২২ গজে যাবতীয় আক্ষেপ পুষিয়ে নিলেন রোহিত গুরুনাথ শর্মা। পিচের চরিত্র বুঝে প্রথম ৫০ রান করলেন সংযমী মেজাজে। আর শতরানে পৌঁছলেন মারকাটারি ঢঙে। লং অনের উপর দিয়ে মইন আলিকে ছক্কা হাঁকিয়ে।
প্রথম ইনিংসে ৯৯ রানের ঘাটতি। সেই ঘাটতি মেটানোই ছিল প্রথম লক্ষ্য। কে এল রাহুলকে সঙ্গে নিয়ে সেই লক্ষ্য পূরণের দিকেও অনেকটা এগিয়ে গিয়েছিল রোহিত। কিন্তু জেমস অ্যান্ডারসনের আচমকা ঢুকে আসা বলে রাহুল (৪৬) ফিরে যেতেই বাড়তি সতর্ক হয়ে পড়েছিলেন। আর সেই সতর্কতা মেনেই অর্ধশতরান করতে নিয়েছিলেন ১৪৫ বল। কিন্তু তারপর থেকেই ছোটালেন স্ট্রোকের ফুলঝুরি। আগমার্কা বিলিতি মেঘলা আবহাওয়া। মন্থর পিচ। সুইং না থাকলেও কিছুটা সিম মুভমেন্ট আদায় করে নিচ্ছিলেন অ্যান্ডারসন, রবিনসনরা। কিন্তু তাঁদের সমস্ত জারিজুরি ম্লান করে দিয়েই কেরিয়ারের অষ্টম শতরান পূর্ণ করলেন রোহিত। এই নিয়ে তৃতীয়বার শতরানে পৌঁছলেন ছক্কা মেরে। বিদেশের মাটিতে প্রথম শতরান করার ফাঁকেই টেস্ট কেরিয়ারে পেরোলেন তিন হাজার রানের মাইলফলক। আন্তর্জাতিক কেরিয়ারেও ১১ হাজার রান পূর্ণ হয়ে গেল রোহিতের। দ্বিতীয় নতুন বল নেওয়ার পর প্রথম বলেই চালাতে না গেলে ১২৭-এর থেকে অনেক বেশি রান করতে পারতেন। তবে এবারও বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়লেন পুল করতে গিয়ে। চলতি সিরিজে তৃতীয়বার।
তার আগে অবশ্য দলকে শক্ত ভিতে দাঁড় করিয়ে গেলেন ‘শর্মাজি কা বেটা’। প্রথমে ওপেনিং জুটিতে রাহুলের সঙ্গে ৮৩ রান। পরে চেতেশ্বর পুজারাকে সঙ্গী করে দ্বিতীয় উইকেটে ১৫৩ রান। তবে হিটম্যান ফিরতেই মনঃসংযোগ হারালেন পুজারা (৬১)। ফিরলেন রবিনসনের সেই ওভারেই। ২৩৬/১ থেকে আচমকা ২৩৭/৩। তবে শেষবেলায় রুখে দাঁড়িয়েছেন বিরাট কোহলি (২২ ব্যাটিং) ও রবীন্দ্র জাদেজা (৯ ব্যাটিং)। মন্দ আলোর জন্য অবশ্য নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হয়েছে এদিনের খেলা। আপাতত জো রুটদের থেকে ১৭১ রানে এগিয়ে টিম ইন্ডিয়া।
তবে পিচের যা অবস্থা তাতে নিঃসন্দেহে হাত কামড়াচ্ছেন কোহলি। তৃতীয় দিনের শেষ সেশনে রুটও যেরকম টার্ন আদায় করলেন তাতে চতুর্থ ইনিংসে অশ্বিনকে সামলানো রীতিমতো কষ্টসাধ্য হতে পারত রুটদের কাছে।
তার আগে অবশ্য কোহলি অ্যান্ড কোং-এর জন্য বড় পরীক্ষা অপেক্ষা করছে। দ্বিতীয় নতুন বলের বয়স মাত্র ১২ ওভার। রবিবার সকালে সেই বল সামলানোই বড় চ্যালেঞ্জ কোহলি-জাদেজার সামনে। অন্তত আরও দেড়শো রান তুলতে না পারলে ম্যাচ বাঁচানোই কঠিন হয়ে উঠতে পারে টিম ইন্ডিয়ার কাছে।