কার্গিল যুদ্ধে নামার লক্ষ্যে ফিরিয়েছিলেন কাউন্টি খেলার প্রস্তাব
স্পোর্টি ওয়ার্ল্ড নিউজ ডেস্কআগুনে পেস বনাম বলিষ্ঠ ব্যাটিং। শচীন তেন্ডুলকর-শোয়েব আখতার দ্বৈরথ মানেই ২০০৩ বিশ্বকাপের সেই অনবদ্য ছক্কা। যখন স্কোয়্যার কাটে রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেসকে সুপারস্পোর্ট পার্কের গ্যালারিতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার। যে কোনও ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীর মনে এখনও তাজা ১৭ বছর আগের সেই দৃশ্য। আর এখানেই আক্ষেপ শোয়েবের। ১৯৯৯-এর ফেব্রুয়ারিতে ইডেনে এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচে প্রথমবার শচীনের মুখোমুখি হয়েছিলেন শোয়েব। আর প্রথম বলেই ছিটকে দিয়েছিলেন মুম্বইকরের স্টাম্প। কিন্তু সেই ঘটনা অনেকেরই স্মৃতি থেকে মুছে গিয়েছে। যে প্রসঙ্গে শোয়েব বলছেন, “শুনেছিলাম, শচীন ক্রিকেটের ভগবান। কিন্তু ওকে প্রথম দেখার পর মনে হয়েছিল, ও কি সত্যিই ভগবান? তখন আমরা কেউই কাউকে চিনতাম না। ও নিজের মনোভাব নিয়ে খেলতে নেমেছিল, আর আমি নিজের মনোভাব নিয়ে। কিন্তু চেয়েছিলাম প্রথম বলেই ওকে আউট করতে। আর সেটাই হয়েছিল।“
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই অলস্টার ক্রিকেটে শচীনের সঙ্গে একই দলে খেলেছিলেন শোয়েব। বলেছিলেন, “ভগবানকে ধন্যবাদ যে আমি আর শচীন একই দলের হয়ে খেলছি। ওর বিরুদ্ধে খেলতে খেলতে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি।“
এরই পাশাপাশি উঠে এসেছে শোয়েবের ভারত-বিদ্বেষের প্রসঙ্গ। প্রাক্তন পাক পেসার জানিয়েছেন, কার্গিল যুদ্ধে লড়তে যেতে হতে পারে, এই মনোভাব থেকেই দু’বার ফিরিয়েছিলেন কাউন্টি ক্রিকেটে খেলার প্রস্তাব। বলছেন, “এক লক্ষ ৭৫ হাজার পাউন্ডের বিনিময়ে আমাকে সই করাতে চেয়েছিল নটিংহ্যাম। সেটা ১৯৯৯ সাল। এরপর ২০০২ সালেও কাউন্টিতে খেলার প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু কার্গিল যুদ্ধের জেরে দু’বারই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলাম। একদিন লাহোরের উপকণ্ঠে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এক সেনা আধিকারিক এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে আমি ওখানে কী করছি। তাঁকে বলেছিলাম, যুদ্ধ শুরু হতে চলেছে। মরলে দু’জনে একসঙ্গেই মরব। কাউন্টিগুলি আমার সিদ্ধান্তে হতবাক হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তখন কাউন্টি ক্রিকেট নিয়ে ভাবার মতো অবস্থা আমার ছিল না। কাশ্মীরে আমার যে বন্ধুরা থাকে তাদের ফোন করেছিলাম। জানিয়েছিলাম যে লড়াইয়ের জন্য আমি তৈরি।“ একইসঙ্গে যোগ করেছেন কার্গিল যুদ্ধ চলাকালীন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা। শোয়েবের কথায়, “ভারত থেকে কিছু যুদ্ধবিমান এসে আমাদের ৬-৭ টি গাছ নষ্ট করে দিয়েছিল। আমাদের পক্ষে সেটা বড় ক্ষতি ছিল। খবর জানার পর মুষড়ে পড়েছিলাম। আমার স্ত্রী এসে আমাকে শান্ত করেছিল। কিন্তু পরের দিনের খবর না শোনা পর্যন্ত মনের অবস্থা একইরকম ছিল। রাওয়ালপিন্ডিতে থাকার সুবাদে সরকারি সদর দপ্তরের সঙ্গে আমার ভালোই যোগাযোগ রয়েছে।“