‘ঠিক যেন সিনেমার মতো’
স্পোর্টি ওয়ার্ল্ড নিউজ ডেস্ক২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর। বড়দিনের ছুটি কাটিয়ে গোটা পৃথিবী যখন আড়মোড়া ভাঙছে ঠিক তখনই ভয়াবহ কম্পন দেখা দিয়েছিল প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূল অঞ্চলে। সঙ্গে উত্তাল ঢেউ। সুনামির সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা এখনও অনেকের মনে দুঃস্বপ্ন হয়ে থেকে গিয়েছে। তাঁদেরই একজন অনিল কুম্বলে। যিনি সুনামির শুরুতে বিষয়টির তাৎপর্যই উপলব্ধি করতে পারেননি।
এক অনলাইন আড্ডায় প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক কুম্বলে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে বলেছেন, “সেই সময় স্ত্রী এর ছেলেকে নিয়ে চেন্নাই গিয়েছিলাম। ছেলের বয়স তখন মাত্র দশ মাস। গাড়ি করে বেঙ্গালুরু থেকে চেন্নাই ছ’ঘণ্টার রাস্তা। ছেলের উপর অতটা ধকল পড়ুক সেটা চাইনি। তাই বিমানের টিকিট বুক করেছিলাম। ২৬ তারিখই আমাদের চেন্নাই থেকে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু আগের দিন প্রায় সারা রাত আমার স্ত্রী জেগে ছিল। বারবার আমাকে জাগিয়ে জিজ্ঞাসা করছিল, ‘ক’টা বাজে? আমার শরীর ভালো লাগছে না। অস্বস্তি লাগছে’। আমরা তাড়াতাড়ি উঠে কফি খাচ্ছিলাম। আকাশ মেঘলা ছিল। কিন্তু পরিবেশ শান্তই ছিল।“ তার সঙ্গেই যোগ করেছেন, “যে হোটেলে আমরা ছিলাম সেখানে প্রাতরাশ করার জায়গাটা কিছুটা উঁচুতে ছিল। সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ যখন প্রথম ঢেউ এল তখন আমরা ওখানে ছিলাম। সাড়ে ১১টা নাগাদ আমাদের উড়ান ছিল। তাই সাড়ে ন’টা নাগাদ হোটেল থেকে রওনা দেব ভেবেছিলাম। সবমিলিয়ে, শুরুতে ব্যাপারটা উপলব্ধি করতে পারিনি। বেরোনোর সময় দেখি এক অল্পবয়সি দম্পতি বাথরোব পরা অবস্থাতেই বেরিয়ে এসেছে। তাদের সারা শরীর ভেজা, থরথর করে কাঁপছে। রাস্তায় বেরিয়ে দেখি, অনেক মানুষ জমা হয়েছেন নিজেদের যাবতীয় সম্বল ও সঞ্চয় নিয়ে। ঠিক যেমন সিনেমায় দেখা যায়। আমাদের গাড়ির চালকের ফোনে বারবার ফোন আসছিল। আমরা ওকে বলছিলাম, গাড়ি চালানোর দিকে মনোনিবেশ করতে। ও বলছিল, অনেক জল চলে এসেছে। প্রথমে বুঝতে পারিনি ও কী বলছে। কারণ, তখন বৃষ্টি পড়ছিল না। আর সুনামির বিষয়ে তখন শুনিইনি। বেঙ্গালুরু পৌঁছে যখন টিভি চালালাম তখন বুঝতে পেরেছিলাম যে আসলে কী ঘটেছে। কপালজোরে বেঁচে গিয়েছিলাম।“
উল্লেখ্য, জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ১৩২ টি টেস্টে ৬১৯ উইকেট নিয়েছেন কুম্বলে। যার মধ্যে রয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় বোলার হিসাবে এক ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়ার নজির। একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচেও ২৭১ টি একদিনের ম্যাচে ৩৩৭ টি উইকেট নিয়েছেন জাম্বো।