১২ বছরে প্রথমবার জয়পুরে জয়ী কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব
স্পোর্টি ওয়ার্ল্ড ডেস্করাজস্থান রয়্যালস ইনিংসের ১৩ তম ওভার। বল হাতে রবিচন্দ্রন অশ্বিন। জস বাটলারের মারমুখী মেজাজের সামনে তখন অসহায় দেখাচ্ছিল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবকে। এমন সময়ই অভিনব পন্থা নিলেন কিংস ইলেভেন অধিনায়ক অশ্বিন। ওভারের চতুর্থ বল করতে এসে হঠাৎই থমকে গেলেন। নন-স্ট্রাইকার বাটলার তখন ক্রিজের বাইরে। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই বল হাতে উইকেটের বেল তুলে নিলেন অশ্বিন। রান আউট বাটলার। স্বাভাবিকভাবেই মাঠে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় বাটলারকে। টেলিভিশন রিপ্লে দেখে অনেকেই মনে করছেন, অশ্বিন বল করতে যাওয়ার সময় ক্রিজেই ছিলেন বাটলার। কিন্তু তাকিয়ে ছিলেন স্ট্রাইকে থাকা সঞ্জু স্যামসনের দিকে। অশ্বিনের বল করা হয়ে গিয়েছে ভেবেই ক্রিজ ছেড়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। আবার অনেকের মতে, অশ্বিন বল ‘ডেলিভারি’ করতে আসার সময় ক্রিজ ছেড়ে বেরোননি বাটলার। বরং অশ্বিনই অপেক্ষা করছিলেন বাটলারের ক্রিজ ছেড়ে বেরনর জন্য। বাটলার বেরোতেই ক্রিকেটের আইন কাজে লাগিয়ে কাজ হাসিল করেন কিংস ইলেভেন অধিনায়ক। অর্থাৎ, গোটা ঘটনার পিছনেই ছিল অশ্বিনের চাতুরী।
অশ্বিন নিজে অবশ্য এসব সমালোচনাকে পাত্তা দিচ্ছেন না। স্পষ্টই বলছেন, “আমি যখন বল করার জন্য তৈরিই হইনি তখনই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিল বাটলার। সেই সময় যা মনে হয়েছে সেটাই করেছি। গোটা ব্যাপারটাই তাৎক্ষণিক।“ রয়্যালস অধিনাক অজিঙ্ক রাহানে বিষয়টি নিয়ে মনে মনে ক্ষুব্ধ হলেও মখে কিছু বলছেন না। তাঁর কথায়, “ম্যাচ রেফারি নিশ্চয়ই বিষয়টি দেখেছেন। ভবিষ্যতে এই বিষয়ে আমরা সতর্ক থাকব।“
কিন্তু ভি ভি এস লক্ষ্মণ বা ইরফান পাঠানের মতো প্রাক্তনরা বিষয়টিকে একেবারেই ভালোভাবে দেখছেন না। বরং অশ্বিন অখেলোয়াড়চিত আচরণ করেছেন বলেই মনে করছেন তাঁরা। লক্ষ্মণ যেমন পরিষ্কারই বলছেন, “আমি হলে কখনই এটা করতাম না। খেলার মধ্যে যদি কখনও এরকম কিছু হয়েও যেত তা হলে আবেফন ফিরিয়ে নিতাম, যেমন একসময় বীরেন্দ্র সেহওয়াগ করেছিল।“ তাঁকে পূর্ণমাত্রায় সমর্থন করছেন ইরফান পাঠানও। যিনি নিজে কিংস ইলেভেনের জার্সি গায়ে খেলেছেন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে সম্পূর্ণ ভিন্নমত আকাশ চোপড়া। ভারতের প্রাক্তন টেস্ট ওপেনার বলছেন, “সেভাবে দেখতে গেলে খোঁচা দিয়ে আউট হওয়ার পরে ব্যাটসম্যানদেরও তো বেরিয়ে যাওয়া উচিৎ। কিন্তু তারা অপেক্ষা করে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের জন্য।“ সবমিলিয়ে আইপিএলের দৌলতে ক্রিকেট আর ‘ভদ্রলোকের খেলা থাকছে কি না তা নিয়েই শুরু হয়ে গিয়েছে বিতর্ক।
ঘটনা হল, বাটলার (৪৩ বলে ৬৯ রান) ফিরে যেতেই জয়ের রাস্তা থেকে সরতে থাকে রয়্যালস। সঞ্জু স্যামসন (২৫ বলে ৩০ রান) এবং একবছর পরে ক্রিকেটের মূলস্রোতে ফেরা স্টিভ স্মিথ (১৬ বলে ২০ রান) আশা জাগালেও শেষরক্ষা হয়নি। কিংস ইলেভেনের ১৮৪ রানের জবাবে ১৭০ রানের বেশি তুলতে পারেনি রয়্যালস। এর আগে কিংস ইলেভেনকে ভালো জায়গায় পৌঁছে দেন নিজস্ব ছন্দে থাকা ক্রিস গেইল (৪৭ বলে ৭৯ রান) এবং সরফরাজ খান (২৯ বলে ৪৬ অপরাজিত)।