অন্তত ১০ থেকে ১২ জনের কোভিড পরীক্ষায় পজিটিভ; মাহিকে দুষছেন চেন্নাই কর্তা
স্পোর্টি ওয়ার্ল্ড নিউজ ডেস্কআইপিএল ২০২০ শুরুর আগেই বড় ধাক্কা খেল চেন্নাই সুপার কিংস। ধোনিদের শিবিরে অন্তত ১০ থেকে ১২ জনের কোভিড পরীক্ষার ফল পজিটিভ। ক্রিকেটার এবং সাপোর্ট স্টাফ মিলিয়ে সংখ্যাটা ঠিক কত তা জানায়নি সিএসকে কর্তৃপক্ষ। তবে জানা গিয়েছে, কোভিড পজিটিভের তালিকায় রয়েছে দীপক চাহরের নাম। আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে সেরা বোলিং-এর নজির এখন যাঁর দখলে। ফলে, আরও অন্তত সাত দিন কোয়্যারান্টাইনে থাকতে হবে গোটা দলকে। যাঁদের কোভিড পরীক্ষার ফল পজিটিভ তাঁদের আরও ১৪ দিন থাকতে হবে কোয়্যারান্টাইনে। ১৪ দিন পরে তাঁদের আরও দু’বার কোভিড পরীক্ষা হবে। সেই পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এলে কার্ডিয়াক টেস্ট দিতে হবে তাঁদের। তাতে উত্তীর্ণ হলে তবেই তাঁরা আইপিএলের জন্য জৈব সুরক্ষাবলয়ে ঢুকতে পারবেন।
কোয়্যারান্টাইন চলাকালীন সামাজিক দূরত্ববিধির সঙ্গে কোনওরকম আপোস করতে নারাজ সিএসকে। তাই দলের প্রত্যেক সদস্যকে দেওয়া হবে ব্লুটুথ ব্যান্ড। তাঁদের দু’মিটারের মধ্যে কোনও ব্যক্তি এলে সংশ্লিষ্ট সদস্যকে জানান দেবে ওই ব্যান্ড।
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর অধিনায়ক বিরাট কোহলি করোনা-সংক্রান্ত প্রোটোকল নিয়ে সরব হয়েছিলেন। টিম মিটিং-এ বলেছিলেন, এক্ষেত্রে সামান্য অসতর্কতাও গোটা প্রতিযোগিতাকে বিপদে ফেলতে পারে।
আইপিএল কর্তারা অবশ্য বিষয়টিকে খুব বেশি আমল দিতে নারাজ। নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক এক বোর্ডকর্তা যেমন বলছেন, “আইপিএলের জন্য সবমিলিয়ে হাজারখানেক লোক ভারত থেকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এসেছে। এর মধ্যে কিছু মানুষের করোনা পজিটিভ বেরোতেই পারে। কিন্তু তার জেরে আইপিএল বিপাকে পড়ার সম্ভাবনা নেই।“
চেন্নাই শিবিরে অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি শুরু হয়ে গিয়েছে। চেন্নাইয়ের সিইও কাশী বিশ্বনাথ যেমন বলছেন, “দুবাই রওনা হওয়ার মাত্র পাঁচ দিন আগে চেন্নাইয়ে শিবির করতে আগ্রহী ছিলাম না। কারণ, জৈব সুরক্ষাবলয়ে ঢোকার বিষয়টি ছিল। কিন্তু ধোনি বলেছিল, ‘স্যার চার-পাঁচ মাস খেলা থেকে দূরে রয়েছি আমরা। জৈব সুরক্ষাবলয় বহাল থাকুক। কিন্তু সকলের একসঙ্গে হওয়া জরুরী। যাতে দুবাই রওনা হওয়ার আগে সকলে ছন্দে ফিরতে পারি।‘”
তবে বিশ্বনাথন যাই বলুন, ভূত রয়েছে সর্ষের মধ্যেই। গোটা চেন্নাইয়ের মধ্যে ট্রিপলিকেন অঞ্চলে করোনার প্রকোপ ছিল সবচেয়ে বেশি। জুন মাসে পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছিল যে গোটা এলাকা ‘সিল’ করে দিতে হয়েছিল। আর এই ট্রিপলিকেন চিপকের একেবারে লাগোয়া। চিপকের মাঠকর্মীদের একটি বড় অংশ থাকেন এই অঞ্চলে। অনেক খেলোয়াড়ই শিবির চলাকালীন মাঠে মাস্ক ছাড়া ঘুরে বেড়িয়েছেন। তার উপর রয়েছে ধোনিদের ‘ডোন্ট কেয়ার’ মনোভাব। শিবিরের প্রথম দিন থেকে শুরু করে যত ছবি সিএসকে-র সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে রয়েছে তাতে স্পষ্ট, সামাজিক দূরত্বের বিধি মানেননি অনেক ক্রিকেটারই। ১৫ আগস্ট প্রায় একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন ধোনি এবং সুরেশ রায়না। দলের বৈঠকে সামাজিক দূরত্বের বালাই ছিল না। দুবাইগামী বিমানেও সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্কা না করে ছবি তুলেছেন রায়নারা।
সবমিলিয়ে, আইপিএল শুরুর তিন সপ্তাহ আগে ক্রিকেটের থেকে করোনার চিন্তাতেই ডুবে রয়েছে ধোনি অ্যান্ড কোং।