কাজে এল না মায়াঙ্কের দুরন্ত শতরান; ফের নজর কাড়লেন সঞ্জু; কট্রেলের এক ওভারে পাঁচ ছক্কা তেওয়াটিয়ার; অবিশ্বাস্য ফিল্ডিং পুরানের
স্পোর্টি ওয়ার্ল্ড নিউজ ডেস্কলক্ষ্য ২২৪। প্রয়োজন ছিল দ্রুত রান তোলার। যার জন্য চার নম্বরে রাহুল তেওয়াটিয়াকে পাঠিয়েছিলেন রাজস্থান রয়্যালস অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ (২৭ বলে ৫০)। কিন্তু কোথায় কি! প্রথম ১০ বলে পাঁচ রান। কিছুক্ষণ পরে ২৩ বলে ১৭ রান। কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বোলাররা কার্যত বোতলবন্দি করে ফেলেছিলেন তেওয়াটিয়াকে। উল্টোদিকে ততটাই নজর কাড়ছিলেন সঞ্জু স্যামসন (৪২ বলে ৮৫)। কিন্তু ১৭ তম ওভারের প্রথম বলে সঞ্জু ফিরে যেতেই হারের জুজু চেপে ধরেছিল রাজস্থানকে। শেষ তিন ওভারে প্রয়োজন ছিল ৫১ রান। ধারাভাষ্যকারদের বক্সে তখন রীতিমতো ঝড়। কেভিন পিটারসেন থেকে মাইকেল স্লেটার – সকলেই সমালোচনার তির ছুঁড়ে দিচ্ছিলেন স্মিথের দিকে। ডাগ-আউটে রবিন উথাপ্পার মতো ব্যাটসম্যান থাকতে কেন তেওয়াটিয়াকে নামালেন স্মিথ? যাবতীয় সমালোচনার জবাব দেওয়ার জন্য ১৮ তম ওভারকেই বেছে নিয়েছিলেন তেওয়াটিয়া। প্রথম চারটি বলই উড়িয়ে দিলেন বাউন্ডারির বাইরে। পঞ্চম বল ডট। ষষ্ঠ বলে ফের ছক্কা। এক ওভারে ৩০ রান। ওখানেই ঘুরে গেল ম্যাচ। তিন ওভারে ৫১ থেকে দু’ওভারে ২১। টি-২০ জমানায় লক্ষ্য হিসাবে যা নেহাতই জলভাত। পাঞ্জাব অধিনায়ক কে এল রাহুল মরিয়া হয়ে ১৯ তম ওভারে মহম্মদ শামিকে বল করতে এনেছিলেন। প্রথম বলে উথাপ্পাকে তুলেও নিয়েছিলেন শামি। কিন্তু তারপর আরও তিনটি ছক্কা। ১১ বলের মধ্যে আট ছক্কার ওই ঝড়ই ম্যাচ থেকে উড়িয়ে দিল পাঞ্জাবকে। আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে রেকর্ড গড়ল রাজস্থান রয়্যালস।
ম্যাচের শেষে যে শারজায় ‘হাল্লা বোল’ বাজবে তা রাজস্থান ইনিংসের শুরুতে ভাবতে পারেননি তাদের অতি বড় সমর্থকও। নেপথ্যে মায়াঙ্ক-রাহুলের অনবদ্য জুটি। তাঁদের ৯৯ বলে ১৮৩ রানের জুটিই ম্যাচের রাশ তুলে দিয়েছিল পাঞ্জাবের হাতে। এর মধ্যে বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন মায়াঙ্কই। চলতি আপিএলের দ্বিতীয় শতরান এল তাঁর ব্যাট থেকেই। শেষ পর্যন্ত আউট হলেন ৫০ বলে ১০৬ রান করে। ১০ টি চার এবং সাতটি ছক্কা দিয়ে সাজানো ইনিংস। আগের দিন শতরান করা রাহুল চলে গিয়েছিলেন ‘শিট অ্যাঙ্কর’-এর ভূমিকায়। কিন্তু রাহুল (৫৪ বলে ৬৯) আউট হওয়ার পর রানের গতি বাড়াতে পারেনি পাঞ্জাব। শেষ তিন ওভারে ওঠে মাত্র ২৯ রান।
আলাদা করে নজর কেড়েছেন নিকোলাস পুরান। ব্যাট হাতে আট বলে ২৫ রান। তবে তার থেকেও বেশি উল্লেখযোগ্য তাঁর ফিল্ডিং। রাজস্থান ইনিংসের অষ্টম ওভারে যেভাবে বাউন্ডারির বাইরে উড়ে গিয়ে নিশ্চিত ছক্কা বাঁচালেন তা দেখে অবাক বিশেষজ্ঞরা। টুইটারে শচীন তেন্ডুলকার সেই ফিল্ডিং-এর ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, “আমার জীবনে দেখা সেরা সেভ। অবিশ্বাস্য!” তবে পাঞ্জাব বোলাররা ইয়র্কার ব্যবহার না করা অবাক মাস্টার ব্লাস্টার। লেগস্পিনার মুরুগান অশ্বিনকে ঠিকমতো ব্যবহার করা হয়নি, মত শচীনের।
ছবিঃ শচীন তেন্ডুলকরের টুইট থেকে