কাজে লাগল না রাসেলের মরিয়া লড়াই; পিচকে দুষলেন ধোনি
স্পোর্টি ওয়ার্ল্ড নিউজ ডেস্কপুঁজি মাত্র ১০৮ রান। সেই পুঁজি নিয়ে মহেন্দ্র সিং ধোনি-সমৃদ্ধ চেন্নাইকে হারানোর চিন্তা দিবাস্বপ্নেরই সামিল। মঙ্গলবারের চিপকে তা হাড়ে হাড়ে টের পেলেন দীনেশ কার্তিকরা। নিজের শহর চেন্নাইকে মাথা নিচু করেই বিদায় জানালেন কেকেআর অধিনায়ক। পয়েন্ট টেবলের শীর্ষে ওঠার পর এস আর কে-র মুখে যে হাসি ছিল তাও নিমেষে উধাও। উল্টোদিকে, ঘরের মাঠে টানা চার ম্যাচ জিতে চওড়া হাসি মাহির মুখে। এই নিয়ে চিপকে শেষ ১৭টি ম্যাচের মধ্যে ১৬টিতে ফিল চেন্নাই সুপার কিংস।
শিশির ফ্যাক্টর মাথায় রেখে নাইটদের ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন মাহি। শুরুতেই অশনিসংকেত। প্রথম ওভারেই ক্রিস লিনকে (৫ বলে ০) ফিরিয়ে দিয়েছিলেন দীপক চাহর। দ্বিতীয় ওভারে হরভজনের শিকার হন সুনীল নারিন (৫ বলে ৬ রান)। পরের ওভারে ফের চাহরের বলে ডাগ-আউটে ফিরে গেলেন নীতিশ রানাও (৩ বলে ০)। তিন ওভার শেষ নাইটদের স্কোরবোর্ডে তিন উইকেটে ন’রান। ম্যাচের ভাগ্য সেখানেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল। তবু নাইট সমর্থকেরা আশা করেছিলেন, সম্মানজনক রান স্কোরবোর্ডে তুলতে পারবেন নাইটরা। কিন্তু মন্থর পিচে নাইটদের অধিনায়ক কার্তিক (২১ বলে ১৯ রান) এবং সহ-অধিনায়ক উথাপ্পা (৯ বলে ১১ রান) যেভাবে উইকেট উপহার দিয়ে এলেন তা ক্ষমার অযোগ্য। এরপর শুবমান গিলও (১২ বলে ৯ রান) ফিরে যাওয়ায় একসময় নাইটদের স্কোর ছিল ছ’উইকেটে ৪৭। ২০০৮ সালে মম্বইয়ের বিরুদ্ধে ৬৭ অল-আউটের ভূত তখন তাড়া করছে। এই পরিস্থিতিতে টেল-এন্ডারদের আড়াল করে ব্যাট করে গেলেন হাতে চোট পাওয়া রাসেল। দলের ১০৮ রানের মধ্যে তাঁরই অবদান অপরাজিত ৫০। তবে মন্থর পিচ এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিতে অন্যান্য দিনের মতো বিধ্বংসী চেহারায় দেখা যায়নি ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডারকে।
তবে নাইটদের বেঁধে রাখার নেপথ্যে থাকল ক্যাপ্টেন কুলের দুরন্ধর ক্রিকেট-মস্তিষ্ক। বিপক্ষের প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জন্য আলাদা করে পরিকল্পনা করেছিলেন। আর মাঠে একশো ভাগ সফল সেই পরিকল্পনা। লিনের জন্য চাহরের সুইং। নারিনের জন্য ভাজ্জি। মিডল ওভারের জন্য ইমরান তাহির আর রবীন্দ্র জাদেজার স্পিনের জাল। পয়েন্ট টেবলে এক নম্বরে উঠতে মরিয়া ধোনি সব অস্ত্রই ব্যবহার করলেন তাঁর নিজস্ব স্টাইলেই।
চেন্নাই ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই সেন ওয়াটসনের (৯ বলে ১৭ রান) উইকেট খুইয়েছিল। রান পাণিনি সুরেশ রায়নাও (১৩ বলে ১৪ রান)। কিন্তু তৃতীয় উইকেটে ফ্যাফ দু প্লেসি (৪৫ বলে ৪৩ অপরাজিত) এবং আম্বাতি রায়াডু (৩১ বলে ২১ রান) ৪৬ রান যোগ করায় সমস্যায় পড়তে হয়নি ধোনিদের। তবুও যে ম্যাচ ১৮ তম ওভার পর্যন্ত গড়াল তার পিছনে রয়েছে নাইট বোলারদের আঁটোসাঁটো লাইন-লেংথ।
হারের পরেও অবশ্য ইতিবাচক রয়েছেন কার্তিক। বলছেন, “পাঁচ দিনে তিনটি ম্যাচ খেলতে হয়েছে আমাদের। সবকিছু আমাদের অনুকূলে যায়ে, এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। সন্দেউ নেই, আমরা কম রান তুলতে পেরেছি। তবে এই ধরনের উইকেটে কত রান ভালো স্কোরের পর্যায়ে পড়ে সেটা বোঝা মুশকিল।“ সরাসরি না বললেও তাঁর ইঙ্গিত যে চিপকের মন্থর পিচের দিকে, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন নাইট অধিনায়ক। মাহি অবশ্য কোনও রাখঢাক না করেই বলে দিচ্ছেন, “এই ধরনের উইকেটে আমরা খেলতে চাই না। ব্যাটসম্যানরা সেভাবে রানই তুলতে পারছে না। লো-স্কোরিং ম্যাচ হচ্ছে।“