টিম ম্যানজেমেন্টকে চিন্তায় রাখছে রাসেলের চোট
স্পোর্টি ওয়ার্ল্ড নিউজ ডেস্কহাত-পা বেঁধে সমুদ্রে ফেলে দিলেও কোনও এক আশ্চর্য ক্ষমতাবলে ফিরে আসতে পারতেন। হাতকড়া পরিয়ে বন্ধ ঘরে রেখে দিলেও বেরিয়ে আসতেন নাটকীয়ভাবে। শ’খানেক বছর আগে এভাবেই গোটা মার্কিন মুলুককে সম্মোহিত করে রেখেছিলেন হ্যারি হুডিনি। তারপর থেকে কেউ নাটকীয়ভাবে কোনও বিপদ থেকে উদ্ধার পেলে তাকে বলা হত ‘হুডিনি অ্যাক্ট’।
শনিবার আবু ধাবিতে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব পাঞ্জাব ইনিংস চলার সময় বারবার এই শব্দবন্ধই ব্যবহার করছিলেন ইয়ান বিশপ। ‘হুডিনি অ্যাক্ট’। করবেন না-ই বা কেন! লক্ষ্য ১৬৫। এই পরিস্থিতিতে কোনও দল যদি প্রথম উইকেটে ৮৬ বলে ১১৩ রান তুলে দেয়, তাহলে শতকরা ৯৫ ভাগ ক্ষেত্রে জিতবে তারাই। কিন্তু বাকি যে পাঁচ ভাগ সেখানেই ক্রিকেটের মহান অনিশ্চয়তা। তা সে যতই টি-২০ ক্রিকেটের ধুমধাড়াক্কা জমানা হোক না কেন। আর সেই অনিশ্চয়তাকে কাজে লাগিয়েই বাজিমাত করল কলকাতা নাইট রাইডার্স। নিশ্চিত হারের মুখ থেকে ছিনিয়ে আনল রুদ্ধশ্বাস জয়। যাকে অনেকদিন বাদে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন দীনেশ কার্তিক। শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামের মন্থর পিচে রান তুলতে এদিন রীতিমতো হিমশিম খেয়েছেন ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু সেই পিচেই ২৯ বলে ৫৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে গেলেন ডিকে। নেতৃত্বও দিলেন ঠান্ডা মাথায়। নাহলে ম্যাচের শেষ ওভারে যখন ১৪ রান দরকার, আর ক্রিজে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মতো বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান, তখন কেউ স্পিনার দিয়ে বল করায়! কিন্তু কার্তিক নিয়ে এলেন সুনীল নারাইনকে। আর সেই ছকেই বাজিমাত।
শনিবার শুরু থেকেই সমস্যায় পড়ে গিয়েছিল নাইটরা। পিচের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর আগেই বোল্ড আগের ম্যাচের নায়ক রাহুল ত্রিপাঠী (১০ বলে ৪ রান)। মহম্মদ শামির ৫০ তম আইপিএল উইকেট হয়ে থাকলেন তিনি। শুভমান গিলের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট নীতিশ রানা (৪ বলে ২ রান)। ছন্দে ছিলেন না ইয়ন মর্গ্যানও (২৩ বলে ২৪)। এদিনই যিনি আইপিএলে হাজার রান পূর্ণ করলেন। মর্গ্যান যখন আউট হন তখন কেকেআরের রানরেট ছয়েরও নীচে। কারণ, ক্রিজে জমে যাওয়া শুভমান রানের গতি বাড়াতে পারছিলেন না। এমন সময় ক্রিজে আসেন কার্তিক। আটটি চার ও দু’টি ছক্কার সাহায্যে তিনিই গাড্ডা থেকে তোলেন দলকে। অধিনায়কের ইনিংসের দৌলতেই ছ’উইকেট হারিয়ে ১৬৪ রানে পৌঁছয় নাইটরা। বল হাতে নজর কেড়েছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের দুই সদস্য অর্শদীপ সিং (১/২৫) এবং রবি বিষ্ণোই (১/২৫)
দ্বিতীয়ার্ধে আরেক বিপদ। পাঞ্জাব ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই কে এল রাহুলের ক্যাচ ফস্কান আন্দ্রে রাসেল। সঙ্গে চোট পান হাঁটুতেও। তার জেরেই মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন। ১১ ওভারের মাথায় মাঠে ফিরলেও বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি।
রাসেল না থাকায় বোলিং-এর বিকল্প কমে গিয়েছিল কার্তিকের হাতে। কিন্তু দমেননি নাইট অধিনায়ক। প্রতিবন্ধকতা সামলেই দুর্দান্তভাবে ব্যবহার করলেন নারাইন (২/২৮), প্রসিধ কৃষ্ণদের (৩/২৯)। ডেথ ওভারে এই দু’জনই আটকে দেন পাঞ্জাব ব্যাটসম্যানদের। ম্যাচ টাই করার জন্য শেষ বলে ছয় মারার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু ম্যাক্সওয়েলের শট বাউন্ডারির ইঞ্চি দুয়েক আগে ড্রপ পড়ায় ম্যাচ সুপার ওভারে গড়ায়নি। পাঞ্জাবের হয়ে ব্যাট হাতে সফল অধিনায়ক কে এল রাহুল (৫৮ বলে ৭৪) এবং মায়াঙ্ক আগরওয়াল (৩৯ বলে ৫৬)।