আইপিএলের ইতিহাসে প্রথমবার একই দিনে তিনটি সুপার ওভার
স্পোর্টি ওয়ার্ল্ড নিউজ ডেস্ক১৯৬০-এর ব্রিসবেন। ১৯৮৭-এর চেন্নাই। ২০১৯-এর লর্ডস। টাই হওয়া ম্যাচের নিরিখে কোথাও কি এদের পাশে বসে পড়ল রবিবারের আবু ধাবি এবং দুবাই? ঘটনাবলী অন্তত সেরকমই ইঙ্গিত দিচ্ছে। দিনের দু’টি ম্যাচই গড়াল সুপার ওভারে। প্রথম ম্যাচে সুপার ওভারে কলকাতা নাইট রাইডার্স হারাল সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে। আর সন্ধের ম্যাচে? নাটকের পর নাটক। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে নির্ধারিত ২০ ওভারের মধ্যেই জয় হাসিল করতে পারত কিং ইলেভেন পাঞ্জাব। কিন্তু মোক্ষম সময় কে এল রাহুলকে (৫১ বলে ৭৭) বোল্ড করে মুম্বইকে ম্যাচে ফেরান জসপ্রীত বুমরা। ২০ ওভার শেষে দু’দলেরই স্কোর ছিল ১৭৬/৬। ম্যাচ টাই। বুমরার সুপার ওভারে মাত্র পাঁচ রান তলতে পেরেছিল পাঞ্জাব। কিন্তু মাত্র ছ’রান তুলতে গিয়েই আটকে যায় মুম্বই। নেপথ্যে মহম্মদ শামির দুর্দান্ত ওভার। পাঁচ রানের বেশি খরচ করেননি বাংলার পেসার। সুপার ওভারও টাই। যার জেরে আইপিএলের ইতিহাসে প্রথমবার ম্যাচের নিষ্পত্তি হল দ্বিতীয় সুপার ওভারে। নিয়ম অনুযায়ী, দু’দলের যেসব খেলোয়াড় প্রথম সুপার ওভারে ব্যাট এবং বল হাতে নেমেছেন তাঁরা দ্বিতীয় সুপার ওভারে একই ভূমিকায় নামতে পারবেন না। ফলে, মুম্বই যেমন বুমরাকে পায়নি, তেমনই পাঞ্জাব পায়নি শামিকে। দ্বিতীয় সুপার ওভারে ১১ রান তুলেছিল মুম্বই। শেষ বলে মায়াঙ্ক আগরওয়াল কিয়েরন পোলার্ডের নিশ্চিত ছক্কা না বাঁচালে ১৫-তে পৌঁছতে পারত মুম্বই। কিন্তু রোহিত শর্মার দলের কাছে ব্যুমেরাং হয়ে দাঁড়াল ট্রেন্ট বোল্টকে দিয়ে সুপার ওভার করানোর সিদ্ধান্ত। প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকালেন ক্রিস গেইল। দ্বিতীয় বলে এক রান। তৃতীয় এবং চতুর্থ বলে চার মেরে ম্যাচে অবশেষে দাঁড়ি টানলেন মায়াঙ্ক। ভারতীয় সময় রবিবার শুরু হওয়া ম্যাচ যখন শেষ হল তখন ঘড়ির কাঁটা অনুযায়ী সোমবার।
দুপুরের ম্যাচে শুরু থেকেই অস্বস্তিতে ছিল কেকেআর। রাহুল ত্রিপাঠি (১৬ বলে ২৩), নীতিশ রানারা (২০ বলে ২৯) ভালো শুরু করলেও বড় রান পাননি। শুভমান গিল ৩৬ রান করতে নেন ৩৭ বল। ১৫ ওভার শেষেও রানরেট আটকে ছিল সাতে। শেষ পাঁচ ওভারে ৫৮ রান তুলে নাইটদের ১৬৩/৫-এ পৌঁছে দেন অধিনায়ক ইয়ন মর্গ্যান (২৩ বলে ৩৪) এবং দীনেশ কার্তিক (১৪ বলে ২৯ অপরাজিত)।
পাওয়ার প্লে-তে ৫৮ রান তুলে হায়দরাবাদকে চালকের আসনে বসিয়ে দিয়েছিলেন কেন উইলিয়ামসন (১৯ বলে ২৯) এবং জনি বেয়ারস্টো (২৮ বলে ৩৬)। কিন্তু পরপর আঘাত হেনে মর্গ্যানদের লড়াইয়ে ফেরান লকি ফার্গুসন (৩/১৫)। এদিনই যিনি প্রথম সুযোগ পেলেন চলতি আইপিএলে। হাঁটুতে চোট পাওয়া আন্দ্রে রাসেলকে শেষ ওভারে বল করতে না নিয়ে এলে হয়তো সুপার ওভারে গড়াত না ম্যাচ। ওই ওভারে ১৭ রান তুলে ম্যাচ টাই করেন হায়দরাবাদ অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার (৩৩ বলে ৪৭ অপরাজিত)।
সুপার ওভারেও বাজিমাত করেন সেই ফার্গুসনই। প্রথম বলেই বোল্ড ওয়ার্নার। দ্বিতীয় বলে দু’রান। ত্ররুতীয় বলে বোল্ড আব্দুল সামাদ। দু’রানের পুঁজি নিয়ে আর লড়াই করতে পারেনি হায়দরাবাদ।
রবিবারের শেষে সব দলই ন’টি করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে। আরও পাঁচটি করে ম্যাচ বাকি তাদের। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবলের শীর্ষে দিল্লি ক্যাপিটালস। দুই, তিন ও চান নম্বরে যথাক্রমে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (১২), রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর (১২) এবং কলকাতা নাইট রাইডার্স (১০)। বাকি চারটি দলেরই পয়েন্ট ছয়। তবে এদিনের জয় আট নম্বর থেকে ছ’নম্বরে তুলে এনেছে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবকে।