বিফলে নীতিশ রানার দুর্দান্ত ইনিংস; অনিশ্চিত প্লে-অফের রাস্তা
স্পোর্টি ওয়ার্ল্ড নিউজ ডেস্কনিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রাভঙ্গ। এমনভাবেই চেন্নাই সুপার কিংসকে দুষছেন কলকাতা নাইট রাইডার্স সমর্থকরা। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চেন্নাই অবশেষে ছন্দে ফিরল। কিন্তু এমন সময় ফিরল যখন আইপিএল ২০২০-তে তাদের জন্য আর কিছু পড়ে নেই।
শেষ দু’ওভারে জেতার জন্য ৩০ রান প্রয়োজন ছিল চেন্নাইয়ের। এমন সময় তুরুপের তাস লকি ফার্গুসনকে বল করতে ডেকেছিলেন নাইট অধিনায়ক ইয়ন মর্গ্যান। কিন্তু ফার্গুসন যে গতিতে বল করলেন, সেই গতিতেই তাঁকে বাউন্ডারিতে পাঠালেন রবীন্দ্র জাদেজা। নিজের টি-২০ কেরিয়ারের ২৫০ তম ম্যাচ যিনি স্মরণীয় করে রাখলেন। ১৯ তম ওভারে ২০ রান তুলেই ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতে তুলে নিলেন জাদেজারা। যার মধ্যে রয়েছে নো বল, ফ্রি হিট এবং ছক্কা। ম্যাচেসেরার পুরস্কার যতই ঋতুরাজ গায়কোয়াড় পান না কেন, ১১ বলে ৩১ রানের ঝোড়ো ইনিংসের দৌলতে চেন্নাইয়ের জয়ের আসল কারিগর হয়ে থাকলেন ‘স্যার’ জাদেজাই।
তোপের মুখে মর্গ্যানের নেতৃত্বও। ম্যাচের শেষ ওভারে যখন ১০ রান প্রয়োজন তখন নাইট অধিনায়ক আক্রমণে নিয়ে এলেন কমলেশ নাগরকোটিকে। প্রথম একাদশে এমনিতেই অনিয়মিত নাগরকোটি। অভিজ্ঞতাও কম। তার উপর আগের ম্যাচে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে নাগরকোটিকে বলই দেননি মর্গ্যান। এই পরিস্থিতিতে উদীয়মান পেসারের আত্মবিশ্বাসের মাত্রা কম হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু মর্গ্যানের হাতে তখন বস্তুত কোনও বিকল্পই ছিল না।
প্রশ্ন উঠছে রিঙ্কু সিংকে দলে রাখা নিয়েও। মরণবাঁচন ম্যাচে কেন তিনি প্রথম একাদশে? কেনই বা রাহুল ত্রিপাঠিরা দলে থাকতে চার নম্বরে নামলেন উত্তরপ্রদেশের ব্যাটসম্যান? ওপেনিং জুটি নিয়ে অবিশ্রান্ত পরীক্ষানিরীক্ষা, ব্যাটিং অর্ডারে ক্রমাগত রদবদল, দিশাহীন বোলিং পরিবর্তন – লক্ষ্মীবারের ম্যাচে সবকিছুরই দাম চোকাল নাইটরা। একইসঙ্গে প্লে-অফে তাদের জায়গা ঘোরতর অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। এখন অন্যান্য ম্যাচের ফলের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে মর্গ্যানদের।
অথচ শুরুটা এদিন যথেষ্ট ভালো করেছিলেন শুভমান গিল ১৭ বলে ২৬) এবং নীতিশ রানা। কিন্তু সুনীল নারাইন (৭) এবং রিঙ্কু (১১) ফিরে যাওয়ার পরে কিছুটা বেকায়দায় পড়ে গিয়েছিল নাইটরা। আগের ম্যাচে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের প্রথম বলেই আউট হয়ে গিয়েছিলেন নীতিশ। সেটা যে নেহাতই দুর্ঘটনা ছিল তা এদিন ফের প্রমাণ করলেন তিনি। খেললেন ৬১ বলে ৮৭ রানের ঝকঝকে ইনিংস। মর্গ্যান (১৫) রান না পেলেও ডেথ ওভারে কার্যকরী ইনিংস খেলে গেলেন দীনেশ কার্তিক (১০ বলে ২১ অপরাজিত)। তার জেরেই চার উইকেটে ১৭২ রান তুলতে পেরেছিল নাইটরা।
চেন্নাই রান তাড়া করতে নেমেছিল কিছুটা সাবধানী মনোভাব নিয়ে। শেন ওয়াটসন (১৪) আউট হওয়ার পরেই খেলা ঘোরাতে শুরু করলেন ঋতুরাজ গায়কোয়াড় এবং আম্বাতি রায়ুডু। তাঁদের ৩৭ বলে ৬৮ রানের জুটিই চাগিয়ে দিল রানরেট। রায়ুডু (২০ বলে ৩৮) এবং ধোনি (১) পরপর দু’ওভারে আউট হলেও রানের গতিতে ভাঁটা পড়তে দেননি ঋতুরাজ (৫৩ বলে ৭২)। চেন্নাই ইনিংসের ১৮ তম ওভারে বল করতে এসেছিলেন প্যাট কামিন্স। মাত্র চার রান খরচ করে তুলে নিয়েছিলেন ঋতুরাজের উইকেট। কিন্তু শেষ দু’ওভারের জাদেজা-ম্যাজিকই ম্যাচ থেকে ছিটকে দিল মর্গ্যান অ্যান্ড কোং-কে। শেষ দু’বলে প্রয়োজন ছিল সাত রান। জাদেজা দু’বারই বল পাঠালেন গ্যালারিতে। তবে এই ম্যাচেও চার ওভারে ২০ রান দিয়ে ওয়াটসন এবং ধোনির উইকেট তুলে নিলেন বরুণ চক্রবর্তী।