বিধ্বংসী মর্গ্যান; দুরন্ত কামিন্স, যোগ্য সঙ্গত মাভি-বরুণদের
স্পোর্টি ওয়ার্ল্ড নিউজ ডেস্কক্ষীণ হলেও বেঁচে থাকল কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্লে-অফে যাওয়ার স্বপ্ন। রবিবার দুবাইতে তারা ৬০ রানে হারাল রাজস্থান রয়্যালসকে। এদিন প্রথমে ব্যাট করে সাত উইকেটে ১৯১ রান তুলেছিল নাইটরা। জবাবে ন’উইকেটে ১৩১ রানের বেশি তুলতে পারেনি রাজস্থান।
এদিন ম্যাচ শুরুর আগেই কিছুটা ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল নাইটরা। নেপথ্যে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে চেন্নাই সুপার কিংসের জয়। তার জেরেই আট থেকে সাত নম্বরে উঠে এসেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনিরা। আর আট নম্বরে নেমে গিয়েছিল নাইটরা। কিন্তু খাতায়-কলমে সেখান থেকেই দু’নম্বরে উঠে আসার সম্ভাবনা থাকত কেকেআরের। সেক্ষেত্রে আগে ব্যাট করলে ৮০ রানে জিততে হত নাইটদের। অর্থাৎ, যেহেতু কেকেআর প্রথমে ব্যাট করে ১৯১ তুলেছিল সেহেতু ১১১ রানে রাজস্থানকে আটকে রাখতে পারলে দু’নম্বরে উঠে আসতে পারত নাইটরা।
প্যাট কামিন্সরা যেভাবে শুরু করেছিলেন তাতে ১১১-এর মধ্যে রাজস্থানকে আটকে রাখার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। প্রথম পাঁচ বলে ১৯ রান। ষষ্ঠ বলে রবিন উথাপ্পার উইকেট (৬)। পাঁচ ওভার শেষে রাজস্থানের রান ছিল পাঁচ উইকেটে ৩৭। যার মধ্যে চার উইকেটই কামিন্সের। ততক্ষণে প্যাভিলিয়নে বেন স্টোকস (১৮), স্টিভ স্মিথ (৪), সঞ্জু স্যামসন (১), রিয়ান পরাগরাও (০)। তারপরেও যে রাজস্থানকে আটকে রাখা গেল না তার পিছনে জস বাটলার (২২ বলে ৩৫), রাহুল তেওয়াটিয়া (২৭ বলে ৩১) এবং শ্রেয়স গোপাল (২৩ বলে ২৩ অপরাজিত)। কামিন্স প্রথম ওভারে উথাপ্পাকে ফেরালেও ১৯ রান খরচ করেছিলেন। পরের তিন ওভারে ১৯ রান খরচ করে নিলেন তিন উইকেট। ম্যাচের সেরাও হলেন। কিন্তু এদিন অজি পেসারকে দুর্দান্তভাবে সহযোগিতা করলেন শিবম মাভি (৪-১-১৫-২), বরুণ চক্রবর্তী (৪-০-২০-২), কমলেশ নাগরকোটির (৪-০-২৪-১) মতো দেশীয় প্রতিভারা।
ম্যাচের শুরুতেই অবশ্য খলনায়ক বনে গিয়েছিলেন নীতিশ রানা। গত পাঁচ ইনিংসে এই নিয়ে তৃতীয়বার আউট হলেন শূন্যতে। তার চেয়েও বড় ব্যাপার, বল পরিষ্কার ব্যাটে লাগিয়েও অহেতুক ‘ডিআরএস’ নিলেন। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই নষ্ট হল রিভিউ। দ্বিতীয় উইকেটে ৪৯ বলে ৭২ রান যোগ করে কিছুটা সামাল দিয়েছিলেন শুভমান গিল (২৪ বলে ৩৬) এবং রাহুল ত্রিপাঠী (৩৪ বলে ৩৯)। কিন্তু তাঁরা দু’জন, সুনীল নারাইন (০) এবং দীনেশ কার্তিক (০) অল্প ব্যবধানে ফিরতেই ৭৩/১ থেকে ৯৯/৫ হয়ে যায় নাইটদের স্কোর। কিন্তু শেষ ৪০ বলে ৯০ রান তুলে কেকেআর-কে ভালো জায়গায় পৌঁছে দেন অধিনায়ক ইয়ন মর্গ্যান (৩৫ বলে ৬৮ অপরাজিত), আন্দ্রে রাসেল (১১ বলে ২৫) এবং কামিন্স (১১ বলে ১৫)। আধডজন ছক্কা এবং পাঁচটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যে ইনিংস মর্গ্যান খেলে গেলেন তার সমকক্ষ ইনিংস শেষ কবে কোনও নাইট অধিনায়ক খেলেছেন মনে করা যাচ্ছে না। শেষ ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে রান নেওয়ার সুযোগ থাকতেও রান নেননি মর্গ্যান। সেই সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল না তা প্রমাণ করলেন ইনিংসের শেষ বলে ছয় মেরে।
পয়েন্ট টেবলে আপাতত চার নম্বরে নাইটরা। গ্রুপের ১৪ ম্যাচের শেষ তাদের পয়েন্ট ১৪। নেট রানরেট -০.২১। দুই এবং তিনে রয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর এবং দিল্লি ক্যাপিটালস। তাদেরও পয়েন্ট ১৪। কিন্তু নেট রানরেটে শ্রেয়স আইয়ারদের (-০.১৬) থেকে সামান্য এগিয়ে রয়েছেন বিরাট কোহলিরা (-০.১৫)। কালই যারা একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে। সেই ম্যাচে যদি কোনও দল বড় ব্যবধানে হারে তাহলে সুবিধা নাইটদের। তবে নাইট শিবির মূলত তাকিয়ে রয়েছে মঙ্গলবারের দিকে। যেদিন গ্রুপের শেষ ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের মুখোমুখি হবে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। ১৩ ম্যাচে আপাতত ১২ পয়েন্ট ডেভিড ওয়ার্নারদের। কিন্তু নেট রানরেট (+০.৫৬) যথেষ্ট ভালো হায়দরাবাদের। ফলে মুম্বইকে হারাতে পারলে সরাসরি প্লে-অফে চলে যাবে তারা। কিং খানের জন্মদিনে মুম্বইয়ের জয়ের জন্যই ‘মন্নত’ নাইট শিবিরে।