• +91 6291642485
  • 6291642485
Banner

খেলার বিভাগ > ক্রিকেট

রোহিতদের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলা নিয়ে ধোঁয়াশা

চাপে টিম ইন্ডিয়া। 

এ যেন সরকারি চাকরির মত অবস্থা। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলতে গেলে লাগবে দুটো জায়গা। মানে দুটো দেশ। আর সেখানে এই দুই জায়গার লড়াইয়ের জন্য তাল ঠুকছে পাঁচ দেশ। আমরা সেই পাঁচ টেস্ট দলের জন্য সামনে কী চ্যালেঞ্জ আছে  ২০২৫ সালের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে পৌঁছানোর জন্য,  চলুন তা দেখে নিই। 
এই মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়া এবং ভারত শীর্ষ দুই স্থানে রয়েছে এবং ওভালে স্মরণীয় ২০২৩ ফাইনালের পুনরাবৃত্তি একটা ক্ষীণ সম্ভাবনা রয়েছে। 
কিন্তু শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মত দলগুলো লর্ডসে পরের বছরের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জায়গা অর্জনের জন্যও লড়াইয়ে রয়ে গেছে।
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ হারের পরেই ফের দুঃসংবাদ ভারতীয় শিবিরে। দীর্ঘদিন এক নম্বরে থাকার পরে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান হাতছাড়া রোহিত ব্রিগেডের। ফলে প্রশ্ন উঠছে, আগামী জুন মাসে লর্ডসে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারত কি আদৌ নামতে পারবে? 
পরপর দুটি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলেছে ভারত। একটা সময়ে তৃতীয়বার ফাইনাল খেলার দৌড়েও প্রবলভাবে এগিয়ে ছিল মেন ইন ব্লু। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চলতি মরসুমের শুরুতে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছিল ভারত। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে জোড়া টেস্ট জিতে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে আসে মেন ইন ব্লু। তার পরে অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট হেরে পয়েন্ট তালিকায় অনেকখানি নেমে যেতে হয় ভারতকে। 
চলতি বছরের শুরুতে ইংল্যান্ডকে ৪-১ হারানোর পর পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে আসে ভারত। সেখান থেকে রোহিতদের ডব্লুটিসি ফাইনাল খেলা নিয়ে কোনও সংশয় ছিল না ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে। ঘরের মাঠে বাংলাদেশ এবং নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ জিতে ফাইনাল খেলা নিশ্চিত করে ফেলবে, এমনটাই অনুমান ছিল। কিন্তু যাবতীয় হিসাব উলটে গেল কিউইদের বিরুদ্ধে সিরিজ হারের পরে। ঘরের মাঠে ২৪ বছর পরে চুনকাম হল ভারত। সেই সঙ্গে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলেও দ্বিতীয় স্থানে নেমে যেতে হল রোহিতদের। বর্ডার-গাভাসকর ট্রফির আগেই পয়েন্ট টেবিলে সকলের উপরে অস্ট্রেলিয়া।
তার পর থেকে প্রশ্ন উঠছে,  আসন্ন বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে কি আদৌ খেলতে পারবে ভারত? আপাতত রোহিতদের ঝুলিতে রয়েছে ৫৮.৩৩ শতাংশ পয়েন্ট। চলতি মরসুমে আর ৫টা টেস্ট খেলবে ভারত, বর্ডার গাভাসকর ট্রফিতে। অজিভূমে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অন্তত চারটি টেস্ট জিততেই হবে রোহিতদের ফাইনাল খেলা নিশ্চিত করার জন্য। প্যাট কামিন্সের দল ফাইনাল খেলা কার্যত নিশ্চিত করে ফেলেছে। এছাড়াও ফাইনালে খেলার দৌড়ে রয়েছে শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকাও। সবমিলিয়ে বর্ডার-গাভাসকর ট্রফির আগে প্রবল চাপে মেন ইন ব্লু।


১) অস্ট্রেলিয়া 

সম্ভাব্য পয়েন্ট 62.50% 

 বাকি সিরিজ: ভারত (হোম, পাঁচ টেস্ট), শ্রীলঙ্কা (অ্যাওয়ে, দুই টেস্ট) 

 সর্বোত্তম সম্ভাব্য সমাপ্তি: 76.32% 

 বর্তমান বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ডের কাছে ভারতের সিরিজ হারের পরে প্রথম জায়গাটি পুনরুদ্ধার করেছে এবং ফাইনালে টানা দ্বিতীয়বার যাওয়ার পথে রয়েছে।  যাই হোক, প্যাট কামিন্সের দলকে 2023 সালে জয়ী শিরোপা রক্ষা করতে হলে তাদের বাকি সাতটি টেস্টের মধ্যে ন্যূনতম চারটি জিততে হবে। 

 ভারতের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার একটি সুবিধা হল পরের বছর শ্রীলঙ্কায় তাদের দুটি টেস্ট রয়েছে, যার অর্থ তারা তাত্ত্বিকভাবে রোহিত শর্মার সাথে ২-২ ড্র করতে পারে এবং এশিয়া সফরের আগে ফাইনালে জায়গা পাওয়ার জন্য লড়াইয়ে থাকতে পারে। 
তবে অস্ট্রেলিয়ার মাথায় রয়েছে ভারতের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে তাদের সাম্প্রতিক রেকর্ড খারাপ। 


 ২) ভারত 
সম্ভাব্য পয়েন্ট 58.33% 

 বাকি সিরিজ: অস্ট্রেলিয়া (অ্যাওয়ে, পাঁচ টেস্ট) 

 সর্বোত্তম সম্ভাব্য সমাপ্তি: 69.30% 

 দুইবারের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের রানার্স আপরা পরের বছরের ফাইনালে জায়গা পাওয়ার জন্য বেশ ভালোই খেলে যাচ্ছিল কিন্তু নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে অভূতপূর্ব ০-৩ সিরিজ হার রোহিতের দলের সম্ভাবনা নষ্ট করেছে। 
মুম্বইয়ে ব্ল্যাক ক্যাপসের কাছে 25 রানে পরাজয়ের সাথে, রোহিত শর্মার দল অস্ট্রেলিয়ার নিচে নেমে গেছে এবং এখন অস্ট্রেলিয়া যাবে এবং ফাইনালে খেলার যোগ্যতা নিশ্চিত করতে তাদের কমপক্ষে চারটি ম্যাচ জিততে হবে। কোনও ম্যাচ হারা চলবে না।


৩) শ্রীলঙ্কা - 

সম্ভাব্য পয়েন্ট 55.56% 

 বাকি সিরিজ: দক্ষিণ আফ্রিকা (অ্যাওয়ে, দুই টেস্ট), অস্ট্রেলিয়া (হোম, দুই টেস্ট) 

 সেরা সম্ভাব্য সমাপ্তি: 69.23% 

 ইংল্যান্ডে তৃতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হেড-টার্নিং জয়ের অর্থ হল শ্রীলঙ্কা তাদের বাকি চারটি টেস্ট থেকে আরও তিনটি জয় নিয়ে এখনও বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠতে পারে। 

 নভেম্বরের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকায় নির্ধারিত দুটি টেস্ট এবং 2025 সালে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে আরও দুটি ম্যাচের সিরিজ রয়েছে। টেস্ট ক্যারিয়ারে কামিন্দু মেন্ডিসের দুর্দান্ত শুরু শ্রীলঙ্কা দলকে সাহায্য করেছে, প্রতিযোগিতায় তার প্রথম 12 ইনিংসে 94.30 গড়।  
যদি শ্রীলঙ্কা দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি জয় তুলে নিতে পারে, তা হলে পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়ে ফাইনাল খেলার সম্ভাবনা বাড়বে দ্বীপ রাষ্ট্রের।

 ৪) নিউজিল্যান্ড 
 সম্ভাব্য পয়েন্ট 54.55% 

 বাকি সিরিজ: ইংল্যান্ড (হোম, তিনটি টেস্ট) 

 সর্বোত্তম সম্ভাব্য সমাপ্তি: 64.29% 

 ভারতে একটি ঐতিহাসিক সিরিজ জিতে নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা দাবি করার আশাকে শক্তিশালী করেছে। তবে তালিকায় শীর্ষ দুই স্থানে শেষ করতে হলে তাদের ঘরে এখনও প্রচুর কাজ করতে হবে। 
ব্ল্যাক ক্যাপদের ফাইনালে ওঠার জন্য তাদের বাকি তিনটি টেস্টে জয়ের প্রয়োজন হবে।  এর মানে বেন স্টোকসের নেতৃত্বে শক্তিশালী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ভারতে তাদের হোয়াইটওয়াশের পুনরাবৃত্তি। 

 কিউইদের জয়ের গতি আছে কিন্তু সেটাকে কাজে লাগাতে হবে।


৫)দক্ষিণ আফ্রিকা 

সম্ভাব্য পয়েন্ট 54.17% 

 বাকি সিরিজ: শ্রীলঙ্কা (হোম, দুই টেস্ট), পাকিস্তান (হোম, দুই টেস্ট) 

 সর্বোত্তম সম্ভাব্য সমাপ্তি:69.44 % 

 দক্ষিণ আফ্রিকা, উপ-মহাদেশে একটি জয়ের জন্য এক দশকের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়েছে উদ্বোধনী খেলায় একটি চিত্তাকর্ষক জয়ের সঙ্গে, তারপরে দ্বিতীয় ম্যাচে একটি দুর্দান্ত ইনিংস এবং 273 রানে জয়লাভ করে আরও বেশি তাদের সমর্থকদের আশাবাদী করে তুলেছে বিশ্বের চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল খেলার জন্য। 
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে 2-0 সিরিজ হোয়াইটওয়াশ দক্ষিণ আফ্রিকা আগামী বছরের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে পৌঁছানোর আশা জাগিয়েছে, তবে তাদের এই ফর্ম ধরে রাখতে হবে এবং বছরের শেষের দিকে ঘরের মাটিতে তাদের চারটি প্রতিযোগিতার মধ্যে তিনটিতে জিততে হবে। 
নভেম্বরের শেষে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের হোম সিরিজ প্রোটিয়াদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে, কারণ সেখানে সিরিজ সুইপ তাদের নিজেদের ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেবে এবং দ্বীপ রাষ্ট্রের ফাইনালে পৌঁছনোর যে কোনও আশার অবসান ঘটাবে।  
 সিরিজ জয়ের পর স্ট্যান্ডিংয়ে চতুর্থ স্থানে উঠে দক্ষিণ আফ্রিকা হঠাৎ করেই স্ট্যান্ডিংয়ে শীর্ষ দলগুলোর জন্য সত্যিকারের হুমকি হয়ে উঠেছে কারণ তাদের ঘরের মাঠে আরও চারটি ম্যাচ রয়েছে।

     

বিজ্ঞাপন

Goto Top