সঞ্জুর শতরান।
সিরিজ শুরুর আগে থেকেই আলোচনায় ছিলেন সঞ্জু স্যামসন। ধারাবাহিকতার অভাব থাকলেও সঞ্জুর হয়ে গলা ফাটিয়েছিলেন অনিল কুম্বলের মতো প্রাক্তনীরা। সেই সঞ্জু আবার নিজেকে প্রমাণ করলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম ম্যাচেই মারকুটে সেঞ্চুরি হাঁকালেন তিনি। তাঁর শতরানে ভর করে ডারবানে রানের ফোয়ারা ছোটাল ভারত। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ২০২ রান করে ভারত। জবাবে প্রোটিয়া বাহিনী গুটিয়ে যায় ১৭.৫ ওভারে ১৪১ রানে অলআউট হয়ে যায়। ৬১ রানে জয় দিয়ে প্রোটিয়া সফর শুরু করল ভারত।
জল্পনা ছিল, ডারবানে অভিষেক হতে পারে কেকেআর তারকা রামনদীপ সিংয়ের। কিন্তু অপেক্ষা বাড়ল তাঁর। পাঁচ ব্যাটার, দুই অলরাউন্ডার ও চার স্পেশালিস্ট বোলার নিয়ে দল সাজান ভিভিএস লক্ষ্মণ।পেসার হিসাবে আর্শদীপ সিংয়ের সঙ্গী হন আবেশ খান। দুই স্পিনার রবি বিষ্ণোই ও বরুণ চক্রবর্তী। অক্ষর প্যাটেল ও হার্দিক পান্ডিয়া, দুই সিনিয়র অলরাউন্ডারের ওপর ভরসা রাখেন লক্ষ্মণ।
শুক্রবার টসে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। অভিষেক শর্মা (৭) দ্রুত ফিরে গেলেও দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন সঞ্জু। অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবও কিছুক্ষণ সঙ্গ দেন তাঁকে। যদিও বড়ো স্কোর করতে পারেননি স্কাই। সূর্য ১৭ বলে ২১ রান করেন। এরপর তিলক বর্মা নেমে সঞ্জুর সঙ্গে পাল্লা দিতে রান তুলতে থাকেন। দক্ষিণ আফ্রিকার কোনও বোলারকেই রেহাত করেননি দু’জনে। মাত্র ৪৭ বলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি কেরিয়ারে দ্বিতীয় শতরানটি তুলে নেন সঞ্জু। তাঁর সেঞ্চুরির ঠিক পরেই সাজঘরে ফেরেন তিলক। মাত্র ১৮ বলে ৩৩ রান করেন এই বাঁ-হাতি তরুণ। সঞ্জুর অবদান ৫০ বলে ১০৭ রান। ইনিংস সাজান ১০টি ছয় ও সাতটি চার দিয়ে। বিশ্বের চতুর্থ ক্রিকেটার হিসাবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি পেলেন সঞ্জু। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শেষ টি-টোয়েন্টিতেও তিন অঙ্কের রানের দেখা পেয়েছিলেন তিনি। হার্দিক এদিন ব্যর্থ। ৬ বলে মাত্র ২ রান করেন তিনি। নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে ব্যর্থ রিঙ্কু সিংও। ১০ বল খেলে ১১ রান করেন তিনি। ৭ বলে ৭ রান করে আউট হন অক্ষর। লোয়ার অর্ডার ব্যর্থ হওয়ায় শেষ দিকে রানের গতিও থমকে যায় টিম ইন্ডিয়ার। শেষ ৬ ওভারে ওঠে মাত্র ৪০ রান। তাই ২০২-এর বেশি আর এগোতে পারেনি সূর্য ব্রিগেড।
জবাবে ভারতের স্পিনাস্ত্র মোকাবিলা করার কোনও হাতিয়ার ছিল না প্রোটিয়া শিবিরের কাছে। দুই স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী এবং রবি বিষ্ণোই তিনটি করে উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার মেরুদণ্ড ভেঙে দেন। শুরুতেই এডেন মার্করামকে প্যাভিলিয়নে পাঠান আর্শদীপ। তারপর থেকেই সেভাবে খোলস ছেড়ে বের হতে পারেননি হেনরিখ ক্লাসেন-ডেভিড মিলাররা। শেষ দিকে জেরাল্ড কোয়েৎজি (১১ বলে ২৩) একটা ক্যামিও ইনিংস খেললেও, ম্যাচ ততক্ষণে বেরিয়ে গিয়েছিল প্রোটিয়াদের হাত থেকে। ডারবানের পিচে আয়োজকরা যেখানে কেশব মহারাজ শুধুমাত্র স্পেশাল্সিট স্পিনার হিসাবে খেলিয়েছেন, সেখানে বাজিমাত করে গেলেন ভারতের দুই স্পিনারই। আবেশ দু’টি ও আর্শদীপ এক উইকেট নেন।