রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা চোকার্স। পর পর দু’বার টেস্ট বিশ্বকাপ এবং ২০২৩ সালে এক দিনের বিশ্বকাপ ফাইনালে হারের পর ব্যর্থতার তকমা প্রায় সেঁটে গিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট দলের গায়ে। সেই ব্যর্থ দলটাই পর পর দুটো বড় প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন! বার বার হেরে যাওয়া রোহিত, কোহলিরাই ক্রিকেটজীবনের শেষ প্রান্তে এসে ২২ গজের এভারেস্টে পৌঁছে দিলেন ভারতকে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সাদা ব্লেজ়ার গায়ে ভারতীয় ক্রিকেটারেরা যেন হিমালয়ের একেকটি বরফশুভ্র শৃঙ্গ।
যাঁরা ফাইনাল জিততে পারতেন না, তাঁরাই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও ভারতে নিয়ে আসছেন। রবিবার রাতে ব্যর্থতার তকমাটা এক টানে ছিঁড়ে ফেলল রোহিতের দল। ২০ ওভারের বিশ্বকাপ জেতার পর বার্বাডোজ়ের ঘাস ছিঁড়ে খেয়েছিলেন রোহিত। সেই রোহিতই রবিবার দুবাইয়ে খানিকটা শান্ত। হার্দিক পাণ্ড্য, অক্ষর পটেল, রবীন্দ্র জাডেজারা যখন ট্রফি নিয়ে পিচের উপর বসে ছবি তুলতে ব্যস্ত, তখন কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে অধিনায়ক। তাঁর সঙ্গী কোহলি। মুহূর্তটা হয়তো ভারতীয় ক্রিকেটের আরও এক পালাবদলের ইঙ্গিত দিয়ে রাখল। তার কিছু ক্ষণ আগেই শুভমন গিলের কাঁধে হাত রেখে কোহলি বলে দিয়েছেন, ‘‘ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ একঝাঁক প্রতিভাবান তরুণ ক্রিকেটারের হাতে সুরক্ষিত।’’
সাফল্য পাওয়া কঠিন। নিঃসন্দেহে কঠিন। সেই সাফল্যকে অভ্যাসে পরিণত করা অনেক বেশি কঠিন। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) শেষ তিনটি বড় প্রতিযোগিতায় প্রায় সব ম্যাচ জিতেছে রোহিতের দল। শেষ ২৪টি ম্যাচের ২৩টি জিতেছেন রোহিতেরা। চোনা শুধু ওই ঘরের মাঠের বিশ্বকাপ ফাইনালটা। ভারতীয় দলের কোচের নাম রাহুল দ্রাবিড় থেকে গৌতম গম্ভীর হয়েছে। ভারতীয় সাজঘরের পরিবেশ বদলেছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিসিআই) ক্ষমতার হাতবদল হয়েছে। বদলায়নি শুধু রোহিত, কোহলিদের সাফল্যের খিদে। দু’জনেরই চারটি করে আইসিসি প্রতিযোগিতা জেতা হয়ে গেল। ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর অহমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে দু’জনের চোখে শূন্য দৃষ্টি দেখেছিল ক্রিকেটবিশ্ব। সেই দু’জোড়া চোখেই রবিবার পূর্ণতার দীপ্তি।