যুবভারতীতে বড় ম্যাচ জিততে মরিয়া দুই প্রধানই।
শুরু হয়ে গিয়েছে বাংলার দ্বিখন্ডিত হওয়া। এই ভাগাভাগি অবশ্য নতুন নয়। একশো বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসছে। যখনই ফুটবল মাঠে মুখোমুখি হয় কলকাতার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দী ক্লাব, তখনই বাংলার আপামর জনতা দু’পক্ষে বিভক্ত হয়ে যায়। একপক্ষ সবুজ-মেরুন জার্সির পূজারি, অন্যপক্ষ লাল-হলুদ জার্সির। কোন পক্ষে কত সংখ্যা, তা বলা কঠিন। কারণ, তারা তো শুধু এ দেশে সীমাবদ্ধ নন, সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন। কেউ মেক্সিকো সিটি থেকে ভিডিও বার্তায় কলকাতার বন্ধুকে বলে ওঠেন ‘জয় ইস্টবেঙ্গল’, কেউ প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের নীচ থেকে চিৎকার করে ওঠেন ‘আমার রক্তে সবুজ-মেরুন’।
আজ সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। শনিবাসরীয় সন্ধ্যায় বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের গ্যালারিতে ৬০ হাজার ফুটবলপ্রেমীর ঢল নামবে এবং তাদের গগনচুম্বী শব্দব্রহ্মে মুখর হয়ে উঠবে শহরের আনাচ-কানাচ। কোন পক্ষ আনন্দ করবে আর কারা হতাশায়, দুঃখে আর্তনাদ করবে, সে তো সময়ই জানে। কিন্তু এটিকে মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল এফসি-র দ্বৈরথ শুরু হওয়ার আগে থেকেই আবহের তাপমাত্রা যে রকম চরমে উঠেছে, তা অবর্ণনীয়।
দু’বছর গ্যালারিতে বসে হিরো আইএসএলের ডার্বি দেখতে পাননি দুই দলের সমর্থকেরা। অভুক্ত ফুটবলপ্রেমীদের ভীড় যে শনিবার গ্যালারিতে উপছে পড়বেই, এই নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই। দু’দিন আগেই ঘোষণা হয়ে গিয়েছে, বিক্রির জন্য আর একটিও টিকিট পড়ে নেই। তবু শুক্রবার স্টেডিয়াম চত্ত্বরে দেখা গেল, কিছু মানুষের টিকিট-হাহাকার। একে অপরের উদ্দেশ্যে প্রত্যেকের মুখে একই প্রশ্ন, ‘দাদা, একটা টিকিট হবে’?
ডার্বির আগে দুই দলই দাপুটে জয় পাওয়ায় শনিবারের মহারণ নিয়ে উন্মাদনা কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে যেন। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে কোচেরাও ছিলেন কড়া মেজাজে। কেউ কাউকে যে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে রাজি নন, তা স্পষ্ট জানিয়ে গেলেন দুই ইউরোপিয় কোচই। স্পেনের হুয়ান ফেরান্দো এবং ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন ইংরেজ কোচ স্টিফেন কনস্টান্টাইন, দুজনেই জানিয়ে গেলেন, জিততেই মাঠে দল নামাবেন তাঁরা। গত দুই মরশুমে টানা চার ডার্বিতে হেরেছে যারা, সেই লাল-হলুদ শিবিরও আত্মবিশ্বাসে টগবগ করে ফুটছে।