জয় ছাড়া কিছুই ভাবছেন না মোহনবাগান কোচ।
আজ রাতে যাতে তাঁরা শেষ হাসি হাসতে পারে, হোটেলে ফিরে উল্লাসে মাততে পারে, সে জন্য কোমর বেঁধে তৈরি হচ্ছে এটিকে মোহনবাগান শিবির। বৃহস্পতিবার সকালে প্রস্তুতি সেরেই গোয়ার বিমানে উঠেছিলেন জুয়ান ফেরান্দো ও তাঁর দলের ছেলেরা। শুক্রবারও সন্ধ্যায় অনুশীলনে নামলেন তাঁরা। যত রকম ভাবে নিজেদের তৈরি করা যায়, করে নিচ্ছেন এবং যত প্রস্তুতির বহর বাড়ছে, ততই আত্মবিশ্বাসও দলটার মধ্যে।
সাংবাদিক বৈঠকে কোচ ফেরান্দো ও অধিনায়ক প্রীতম কোটালের কথা শুনে অন্তত মনে হল না, বেঙ্গালুরু এফসি-র মতো টানা এগারো ম্যাচ জিতে আসা দলের বিরুদ্ধে খেতাবী লড়াইয়ের আগে তাঁরা বিন্দুমাত্র চাপে রয়েছে। বরং বেশ আত্মবিশ্বাসী তাঁরা। শনিবারের ফল নিয়ে কথা বলার সময় মাঝে মাঝে চোয়ালও শক্ত হয়ে যাচ্ছিল বঙ্গসন্তানের।
লিগ পর্বে একে অপরের বিরুদ্ধে দুই দলই একটি করে ম্যাচ জিতেছে। এই মরশুমেই বেঙ্গালুরু এফসি প্রথম জয় পায় এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে। তবে সেই দুই ম্যাচে ফলের প্রভাব ফাইনালে কোনও ভাবেই পড়বে বলে মনে করেন না স্প্যানিশ কোচ ফেরান্দো। সেমিফাইনালের আগে যেমন বলেছিলেন, এ দিনও সেই ৯০ মিনিটে ম্যাচ শেষ করার ইচ্ছা প্রকাশ করে বললেন, “বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে আগের ম্যাচগুলোতে যাই হোক, এই ম্যাচে তার প্রভাব পড়বে না। আমাদের লক্ষ্য শুধুমাত্র জয়। এতদিন যে ভাবে খেলে এসেছি, সে ভাবেই খেলব। আমার বিশ্বাস, দলের ছেলেরা লিগের সেরা মুহূর্তটা অর্জন করবে এই ম্যাচে। সে জন্য সবাই তৈরি। অতীতের কথা এখন আর কারও মনে নেই। অতিরিক্ত সময়ে খেলা গড়ানোটা আমার পছন্দের ব্যাপার নয়। তাই ৯০ মিনিটেই ম্যাচ শেষ করতে চাই। যদিও সেটা আমাদের হাতে নয়। প্রতিপক্ষ কেমন খেলবে তার ওপরও নির্ভর করে”।
এই সাফল্য তাঁর কোচিং জীবনে কতটা প্রভাব ফেলবে, তা নিয়েও ভাবতে নারাজ ফেরান্দো। বলেন, “আমি এখানে নিজের কেরিয়ারের কথা ভেবে কাজ করতে আসিনি। ফাইনালে জিতলে আমার কোচিং জীবনে তার কতটা প্রভাব পড়বে সে সব ভাবিনি কখনও। এখানে কাজটা উপভোগ করছি। এখানকার কর্তাদের মানসিকতার সঙ্গে আমার মানসিকতা কিছুটা মেলে। আমার কাজের ওপর সবাই আস্থা রাখে। সে জন্যই লিগ জিততে চাই। কেরিয়ার নিয়ে কখনও ভাবিইনি। এখনও ভাবছি না”।
চলতি মরশুমে অনেক কঠিন সময় পেরিয়ে খেতাবের দোরগোড়ায় পৌঁছনো প্রসঙ্গে এটিকে মোহনবাগান কোচ বলেন, “অনেক কঠিন সময় পেরিয়ে এসেছি আমরা। তার মধ্যেও দলের সবাই আত্মবিশ্বাস বজায় রেখেছে। ওই সময়ে যে খেলাটা দরকার ছিল, সেটাই খেলেছে। যদিও চোটের জন্য একাধিক ম্যাচে আমরা খুব হতাশাজনক পারফরম্যান্স দেখিয়েছিলাম। কিন্তু চোট-আঘাত, কার্ড এগুলো তো ফুটবলেরই অঙ্গ। এসব সত্ত্বেও কী ভাবে পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে হবে, তা ছেলেদের বলে দিয়েছি বারবার। ওরা তা মেনে যে দল হিসেবে এই জায়গায় পৌঁছেছে, এটাই বড় ব্যাপার”।